খেলারাম খেলে যায়...ওয়াচডগ লিখে যায়...

Submitted by WatchDog on Sunday, April 18, 2010

Bangladeshi dirty politics

হাসিনার জন্যে এ মুহূর্তে খুব কষ্ট হচ্ছে। বেচারা হাজারো চেষ্টা করছেন এই পরিবারের নামকে বাংলাদেশের মাটি হতে চিরতরে উচ্ছেদ করতে। ইহজগতের যেখানেই তাদের নাম ছিল কলমের খোঁচায় বদল করা হয়েছে। এমনকি আইন করে সমাধা করা হয়েছে ঘোষক বিতর্কও। এখন হতে ঐ পরিবারের কাউকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মত গুরুতর অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কিন্তু এসবেও খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হয়না। উপরের ছবিটা দেখে তিনি মনে খুব কষ্ট পেয়ে থাকবেন, ভাষায় প্রকাশ না করলেও আমার মত ম্যাংগো-পিপলদের বুঝতে অসুবিধা হয়না। এক বাদশাহীতে দুই বাদশাহ কারই বা কাম্য হতে পারে?

পাঠক, ছবিটা ভাল করে আরও একবার দেখুন। হাস্যোজ্জ্বল দুই পুরুষের পোট্রেট (একজন মৃত, অন্যজন জীবন্মৃত), পাশে দাঁড়ানো স্বর্গীয় দেবীর মত একজন, আর সামনে সিজনাল ম্যংগোর মত ম্যাংগো পিপলদের অন্তহীন পিঁপড়া মিছিল। শুধু আমাদের কেন বিশ্ব দাস প্রথার হাজার বছরের ইতিহাসে প্রভু ভক্তির এমন স্বর্গীয় আয়োজন দ্বিতীয় একটা পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। আসলেই বোধহয় রাজনীতি আমাদের একমাত্র অলংকার। ধন্য দেশের ধন্য নীতি, রাজনীতি।

উপরের ছবিটার দিকে তাকালে আমার কেন জানি কথা বলাতে ইচ্ছে করে। বলতে পারেন নিজের সাথে, অথবা ছবির চরিত্রগুলোর সাথে। জানতে ইচ্ছে করে তাদের চামড়ার নীচে কি এমন চুম্বক সেট করা আছে যার কারণে এ দেশের ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, কৃষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, গবেষক সহ কোটি কোটি মানুষকে দৌড়াতে হয় তাদের পেছনে? আমার এ প্রশ্নের উত্তর হয়ত আমার কাছেই আছে, বলার সাহস রাখিনা, কারণ এ উওর কোটি কোটি উত্তরের একেবারে বিপরীত।

যুদ্ধের প্রথম দিকেই দাদাবাড়ি চলে যেতে বাধ্য হই আমরা। গাড়ি-ঘোড়া বিহীন এমন একটা নির্মল গ্রাম বাংলাদেশে দ্বিতীয় একটা আছে কিনা আজও সন্দেহ হয়। আপ্তরুদ্দিন দাদাবাড়ির স্থায়ী কামলা। চাষাবাদের পাশাপাশি জমিজমা আগলে রাখে বছর জুড়ে। ৯টা মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসলে ফসলে ভরিয়ে দেয় আমাদের গোলা। আপ্তরুদ্দি মত অনেকের পরিশ্রমের কারণে এ দেশের মানুষ বেচে ছিল ৭১’এর ন’মাস। তাদের কেউ ছিল চাষি, কেউ তাঁতি, কেউ জেলে কেউবা আবার নৌকার মাঝি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার যোগফলই ছিল ১৬ই ডিসেম্বর। সেনাছাউনির একজন মেজর কালুরঘাটের কোন অখ্যাত বেতারকেন্দ্র হতে স্বাধীনতা ঘোষনা দিলেন আর কোটি কোটি মানুষ সে ডাকে ঝাপিয়ে পরে দেশ স্বাধীন করলো, এমন একটা অলৌকিক দাবি সবাই মেনে নিলেও আমার মানতে বাধা আছ। কারণ আমার কাছে যুদ্ধ শুধু মাঠের ব্যাপার নয়, যুদ্ধের বিস্তৃতি হাটে মাঠে ঘাটে, ফসলের জমিতে, ব্যবসা বাণিজ্যে। একজন চাষি চাষাবাদের মধ্য দিয়ে তার ভূমিকা রাখে, তেমনি একজন মেজরের স্থান যুদ্ধের মাঠ। সেনাবাহিনী গঠনের মূল উদ্দেশ্যই মাঠে যুদ্ধ করা। কি অপশন খোলা ছিল মেজর জিয়ার সামনে, যুদ্ধে না গিয়ে পালিয়ে থাকা? পাকিস্তানীদের সাথে সহযোগীতা করা? স্বাধীনতার জন্যে যুদ্ধ করা? জিয়া শেষটাই বেছে নিয়েছিলেন। তাতে কি এমন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল? একজন সৈনিকের কাজ কি যুদ্ধ করা নয়? এ জন্যেই কি তাদের বছরের পর বছর ধরে আরাম আয়েশে লালন পালন করা হয়না? প্রশ্নগুলো একান্তই আমার নিজের, এর উত্তরও আমার। কারণ আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধে একজন জিয়ার অবদান আর একজন আপ্তুরুদ্দির অবদান দুটোই খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই।

একজন খুনী চিরদিনই খুনী, হোক সে সেনাবাহিনীর জেনারেল অথবা ভাড়াটে খুনী। জিয়াউর রহমান একজন খুনী। রাতের আধারে কাপুরুষের মত উনি খুন করে করতেন। খুন করতেন সহযোগী সৈনিকদের যাদের কাঁধে চড়ে একজন অখ্যাত মেজর হতে তিনি ’বিখ্যাত’ রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। অতীতের মুক্তিযোদ্ধা বলেই কেউ খুন করার ফ্রী লাইসেন্স পায়না, সত্যটা এই মেজর হতে মেজর জেনারেলের বেলায়ও প্রযোজ্য। বাংলাদেশের রাজনীতিকে দুর্বৃত্তায়নের রূপকারও এই ষড়যন্ত্রকারী, ছাত্ররাজনীতিকে কলুষিত করার অগ্রপথিক এই সেনাশাসক। আমাদের আপ্তুরুদ্দির সাথে জেনারেল জিয়ার এখানেই পার্থক্য, আপ্তু কাউকে কোনদিন স্ব জ্ঞানে খুন করেনি।

তারেক জিয়া! নামের শেষাংশ না থাকলে এই যুবকের পরিচয় হবে একজন ম্লেচ্ছ হিসাবে। একটা সমাজে যত ধরনের অপরাধ ঘটানো সম্ভব তার সবটুকুই ঘটিয়েছেন এই কুলাঙ্গার। ক্ষমতার মসনদে বসে বানিয়েছেন ঐশ্বরীয় জগৎ যেখানে তিনিই রাজা, তিনিই প্রজা, তিনিই বিচারক, এক কথায় সবকিছু। এবং বলা হয় আমাদের ভবিষ্যৎ ইমাম মেহেদি।

স্বশিক্ষিতা খালেদা জিয়া! ৫টা জন্ম তারিখ নিয়ে যার মিথ্যাচার শুরু। উনাকে নিয়ে লিখতে গেলে আরব্য উপন্যাস লেখা যাবে, যাতে থাকবে মিথ্যাচারের পাশাপাশি অযোগ্যতা, অপদার্থতা, অবৈধতার কলঙ্কিত অধ্যায়।

উপরের ছবিটা শুধু শেখ হাসিনাকে নয় আমার মত ম্যাংগো পিপলদেরও কষ্ট দেয়। একটা লুটেরা পরিবারের পেছনে পিপিলিকার মত ছুটছে এ দেশের মানুষ। এটা কষ্টের।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন