পদ্মা সেতুর ৪%, সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার কত?

Submitted by WatchDog on Thursday, January 17, 2013

 Padma Bridge Corruption by Awami League

কথিত রাজনৈতিক হট্টগোলের আশংকায় প্রাক্তন মন্ত্রী আবুল হোসেনকে আসামী করছেনা দুর্নীতি দমন কমিশন। দু একজন রাঘব বোয়ালকে সাময়িক মেহমান বানানো সম্ভব হলেও ষড়যন্ত্রের মূল হোতা মিঃ ৪% কে ধরা যাচ্ছেনা। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে এই মহান দেশপ্রেমিককে গ্রেফতার করা হলে গোটা বাংলাদেশ অচল হয়ে যাবে, শুরু হবে রাজনৈতিক হট্টগোল। একদল চোরের সর্দারকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছেনা বিদেশিদের প্রশ্নের উত্তরে অনেক কারণের পাশাপাশি এমন একটা কারণও উল্লেখ করেছে দুদক। কারণটা গেলানো যায়নি প্রশ্নকর্তাদের। সচিব মোশারফ হোসেন ভূইয়াকে গ্রেফতার ও সাময়িক বরখাস্তের মাধ্যমে দুদক তার নখের ধার প্রমাণ করতে চাইলেও ভেতরের কাহিনী নাকি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সচিবকে খাঁচায় ভরা হয়েছে অন্য কারণে। সরকারের উঁচু মহল সন্দেহ করছে সময় মত এই হাই-প্রোফাইল আমলাকে আটকানো না হলে মুখ হতে বেফাস কথা বেরিয়ে আসতে পারে। এ বিবেচনায় মন্ত্রী আবুল & আবুল ও প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নিক্সন চৌধুরী অনেকটাই নিশ্চিত। অন্তত এ সরকারের আমলে ধরা হচ্ছেনা তাদের। কথায় বলে কান টানলে মাথা চলে আসে। এই তিন চোরার কান ধরে টানলে যাদের মাথা আসবে তাদের চেহারা জাতিকে থমকে দিতে পারে। এবং এখানেই জন্ম নেবে হট্টগোল। দুদকের বুক ফেটে গেলেও মুখ ফাটেনি, তাই তারা বলতে পারেনি ঘটনার আসল কাহিনী। বাস্তবেই দেশে হট্টগোল শুরু হবে। তবে তাতে দেশের সাধারণ মানুষ জড়িয়ে পরবে এমনটা ভাবার কারণ নেই। যারা জড়াবে তাদের আমরা সবাই চিনি। ছাত্রলীগ নামের এই ন্যাশনাল ডিসগ্রেস নিজেদের চামড়া বাঁচানোর জন্যেই মাঠে নামতে হবে। কারণটা মুখ খুলে বলতে পারছেনা দুদক। পদ্মাসেতু সমীকরণের ফলাফল কি হবে তা কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারছি আমরা। বলাই বাহুল্য অর্থ ছাড় করতে যাচ্ছেন বিশ্বব্যাংক। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে পশ্চিম গোলার্ধের বাকি অর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে প্রভাবিত করতে যাচ্ছে তারা।

কালকিনির আবুল হোসেনের চেহারা চরিত্রে এমন কি যাদু আছে যা দিয়ে শেখ হাসিনার মত আয়রন লেডিকে পর্যন্ত বশ করা গেছে? মন্দ জনের কথায় কান দিলে অনেক বাজে কথা বিশ্বাস করতে হবে। এই যেমন আবুলের মালিকানা প্রসঙ্গ। বলা হয় আবুল হোসেনকে মন্ত্রী বানানো হয়েছে ক্ষমতা নিয়ে দুই বোনের লড়াইয়ের মধ্যস্থতা হিসাবে। এই মন্ত্রীর আসল মালিক দেশের মালিকানা ইন লাইনের সেকেন্ড ইন কমান্ড শেখ রেহানা। আমার মত রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ অনেক ম্যাঙ্গো বলছে আবুল বড় অংকে ক্রয় করেছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। আশা ছিল পদ্মা সেতুর মাধ্যমে লাভ সহ উঠিয়ে আনবেন রাজনৈতিক বিনিয়োগ। তার উপর মেট্রোরেল সহ আরও অনেক লাভ ঝুলছিল পাইপ লাইনে। ব্যাপারটা ছিল অনেকটা এ-রকম, আমি খাব, ওরা খাবে এবং তা হবে মিলেমিশে। বাংলায় একটা কথা আছে চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পর ধরা। আবুল হোসেনের মত কাতল মাছ প্রকল্পের শুরুতেই ধরা পরবে এমনটা বোধহয় স্বপ্নেও কেউ কল্পনা করেনি।

ক্ষমতার চার বছর চলে গেছে অথচ সরকারী খাজাঞ্জিখানায় বড় ধরণের দাও মারা যায়নি এখন পর্যন্ত। পশ্চিম গোলার্ধের ডক্টর মোহম্মদ ইউনূসের বন্ধুদের পকেট মারার দুয়ার বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছে হাই প্রোফাইল চোরদের জন্য। এখানেই সামনে আসছে রাশিয়া প্রসঙ্গ। কথায় বলে ভ্রমরে ভ্রমর চেনে। চরিত্রহীন রুশদের বিজাতীয় চরিত্রহীনতার কাহিনী বলতে গেলে হাজার রজনীর আরব্য উপন্যাস লেখা যাবে। ১২ বছর খুব কাছ হতে জানার সূযোগ হয়েছিল এ জাতিকে। উঁচু লেভেলে বড় ধরনের দাও মারার উত্তম স্থান আজকের রাশিয়া। স্বার্থের জন্য ওরা একে অপরকে বিক্রি করতে নূণ্যতম কুণ্ঠাবোধ করেনা। সাড়ে আট কোটি টাকার সমরাস্ত্র কেনার যৌক্তিকতা কি তার সামান্যতম ধারণা দেওয়া হয়নি জাতিকে। অনেকটা গোপনে ছেলে মেয়ে, বোন, বোনের দুই সন্তানকে নিয়ে সরকার প্রধান মস্কো হাজির। ক্রেমলিনের দেয়া অর্থে চড়া সুদে তাদেরই অস্ত্র কেনার অভিনব চুক্তি করে এসেছেন। বলছেন বিশ্বজয় হয়ে গেছে। আজকের দুনিয়ায় রাশিয়া আমাদের মতই তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ। তাদের অস্ত্র পানিপথের মত যুদ্ধের জন্যও কেউ ব্যবহার করেনা। সিরিয়ার শাসকদের মত কসাইরা হচ্ছে রুশ অস্ত্রের আসল ক্রেতা। সেই রাশিয়া হতে চড়া সুদে আমাদের মত দরিদ্র দেশের জন্য সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কেনার আসল রহস্য নিশ্চয় বিশ্বব্যাংক। রাশিয়া দুর্নীতির এমন একটা সেইফ হেভেন যেখানে বিশ্ব ব্যাংকের লম্বা হাত প্রসারিত হবেনা। চাইলেই তারা আবুলদের বলির পাঠা বানাতে পারবেনা।

পশ্চিমাদের সাথে রুশদের বৈরিতা কেবল আদর্শিক নয়, বরং বাজার ভিত্তিকও। দেশের মানব সম্পদ রফতানি ও পোষাক শিল্পের অনেকটাই নির্ভরশীল আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের উপর। তাদের পাশ কাটিয়ে রুশদের সাথে বিতর্কিত অস্ত্রচুক্তি এসব দেশের সাথে দ্বিপক্ষিয় সম্পর্কে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে বাধ্য। সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার অস্ত্রচুক্তির মিঃ ৪%কে চিনতে আমাদের বোধহয় কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। আসুন ধৈর্য্য ধরে দেখতে থাকি এ ধ্বংসাত্মক খেলা। এ ছাড়া আর কি-বা করার আছে আমার মত ম্যাঙ্গোদের।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন