জীবন যেখানে যেমন...

Submitted by WatchDog on Saturday, May 27, 2023

noneকাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়া হয়না অনেকদিন। চাইলেও খাওয়ার সুযোগ নেই। কাচ্চি ও আমার মাঝে দূরত্ব অতিক্রম করতে চাইলে আমাকে ফ্লাই করতে হবে। কাছের শহর ডালাস। ওখানে আসা যাওয়ায় ১৬০০ কিলোমিটার। ঘরের অবস্থা তথৈবচ! গিন্নী বিদেশী হওয়ার কাচ্চি কি জিনিস জানে না। স্থানীয় বাংলাদেশি কম্যুনিটির কারও সাথে পরিচয় নেই যে অতিথি হয়ে কাচ্চি ভক্ষণ করবো।
সে জন্যেই বলি, কাচ্চি বেমজা! কুত্তার মাংসের হলে তো কথাই নেই!!!

কাচ্চি নেই তো কি হয়েছে। বুরিতো, ক্যাসাদিয়া, কার্নে আদোভাদার মত সুস্বাদু মেক্সিকান খাবার গুলো তো আছে!
কাজ উপলক্ষে আজ বাইরে যেতে হয়েছিল। নির্জন এলাকায় আবাসিক প্রকল্প। নির্মাণ কাজের কর্মচারী, কর্মকর্তা ছাড়া কাছাকাছি কয়েক মাইলের ভেতর মনুষ্য ছায়া নেই।
ওখানেই দেখা মেক্সিকান ফুড ট্রাকের। পেটে ছিল অসম্ভব ক্ষুধা, তাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলনা।
বীফ ক্যাসেদিয়া আমার খুবই প্রিয় খাবার। আটা রুটিকে অটিস্টিক পন্থায় ভাজ করে তার ভেতর গ্রাউন্ড বীফ ঢুকিয়ে রোস্ট করার মাঝেই সীমাবদ্ধ প্রস্তুত প্রণালী। সাথে কিছু গুডিস থাকে যার অন্যতম সালাদ, রেড ও গ্রিন চিলি সস।

প্রতিবেশী মেক্সিকানদের নিয়ে এ দেশে অনেকের অনেক রকম এলার্জি আছে, বিশেষকরে ট্রাম্প ও তার মুরিদানদের। অবশ্য এসব এলার্জির প্রায় সবটাই রাজনৈতিক। বাস্তবতা হচ্ছে এ দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে মেক্সিকানদের কোন বিকল্প নেই। হোক তা বৈধ অথবা অবৈধ অভিবাসী মেক্সিকান।

হাড় কাঁপানো শীত অথবা রোস্ট হওয়ার মত প্রচণ্ড গরম কোন কিছুই মেক্সিকানদের জন্যে বাধা হয়না। হাতে ছোটমত টিফিন ক্যারিয়ারে দুটো বুরিতো ও এক বোতল পানীয় নিয়ে ওরা মাঠে নেমে পরে। নির্মাণ কাজের প্রায় ১০০ ভাগ শ্রমিকই মেক্সিকান। এ এমন এক কষ্টের কাজ যা সাদা আমেরিকানদের ঘণ্টায় ১০০ ডলার দিয়েও করানো যাবে না।

হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর দিনান্তে ওরা অন্য রকম মানুষ। দলবেঁধে পার্টি করা, নাচ গানের পাশাপাশি হরেক রকম খাবার ও ড্রিংকস এসব নিয়েই ওদের জীবন। বাইরে হতে দেখলে মনে হবে সদা সুখী একটা জাতি।

স্বীকার করছি, মেক্সিকান ফুডের আমি ভক্ত। কোভিডের কারণে চায়নিজ ফুডকে তালিকা হতে ডিভোর্স দিয়েছি। ইতালিয়ান পাসটা ও চীজ'এ ত্যক্ত বিরক্ত...এমনি এক শূন্যতায় মেক্সিকান ফুড অজান্তেই জায়গা করে নিয়েছে পছন্দের তালিকায়।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন