How Much Land Does a Man Need...Leo Tolstoy

Submitted by WatchDog on Sunday, July 19, 2020

সে বছরটা কোন ঘটনা ছাড়াই বয়ে যাচ্ছিল নিউ ইয়র্কের জীবন। সকালে কাজে যাই, বিকেলে ফিরে আসি। নিয়মিত রান্না করি। ছুটির দিনে জ্যাক্সন হাইটসের দোকানগুলোতে বাজার করতে যাই। মাঝেমধ্যে বন্ধু লুৎফরের সাথে আড্ডা জমাই। উডসাইডের বাসাটার অনেক কমফোর্ট ছিল। পাশেই সাবওয়ে ষ্টেশন। রুজাভেল্টে এভিনিউর উপর ঝাঁকে ঝাঁকে বাস। যা ধরে মেগা শহরের যে কোন কোণায় যাওয়া যায়। অসুবিধা ছিল একটাই, পার্কি! রাতের বেলা বাসায় ফিরলে রাস্তায় গাড়ির পার্কিং পাওয়ার কোন উপায় ছিলনা। অনেক সময় ঘণ্টাখানেক ঘুরেও কাছাকাছি কোথাও রাস্তায় পার্ক করার মত জায়গা পাওয়া যেতোনা।

সেদিনের ব্যপারটা ছিল অন্যরকম। দুপুরে বাসায় ফিরে দেখি গেটের সামনেই ফাঁকা একটা স্পট। মনের আনন্দে পার্ক করে ঘরে ঢুকে সেদিন আর বাইরে না যাওয়ার সিদ্বান্ত নিলাম (অনেকটা 'সাইনফিল্ড' কমেডির চরিত্র জর্জ কষ্টেনজার মত)। রাতটা নির্ভয়ে কাটিয়ে দিলাম। সকালে কাজে যাবো বলে গাড়ির কাছে যেতেই থ! দুটো চাকা পাংচার! একটা হলে বুঝা যেতো। একসাথে দুই চাকা মনে ব্যপক সন্দেহের উদ্রেক করলো। চারদিকে চোখ বুলাতে ঘটনার ব্যপকতা চোখে পরল। রাস্তার দুই পাশে পার্ক করা সব গাড়ির চাকার একই অবস্থা!

মাল্টিপোল রিকোয়েষ্টের পর পুলিশ আসতে বাধ্য হল। রিপোর্ট নিল এবং যথারীতি কালপ্রিটদের ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফিরে গেল। দুদিন পর খবর পাওয়া গেল পাশের ৭২নং রাস্তার উপর নতুন একটা টায়ার ষ্টোর খুলেছে এবং তাদের নিয়োজিত কিছু বখে যাওয়া তরুন অর্থের বিনিময়ে এলাকাজুড়ে টায়ারের উপর তান্ডব চালিয়েছে। পুলিশ স্থানীয় এক তরুনকে ধরার পর সে হর হর করে বলে দেয় ভেতরের কাহিনী।

সন্দেহ নেই জনাব শাহেদ একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। একই লাইনের লাখ লাখ সৈনিকের মত তার চেহারা ও লেবাসে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও চেতনার প্রতিচ্ছবি। মিডিয়াতে এসেও ঝড় তোলেন। কথিত স্বাধীনতার স্বপক্ষের, তথা এক নেত্রীর এক দেশের পক্ষে কথা বলেন। আর দশটা আওয়ামী নেতার মত মুখ আর লেবাসের জোরে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন দলটার আর্ন্তজাতিক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে। তবে এ খেলা তিনি বেশিদিন খেলতে পারেননি। উপরতলার কাউকে অখুশি করার কারনেই হয়ত করোনা কিটের জালিয়াতিতে ধরা খেয়েছেন। এখন তিনি পলাতক। সূত্রমতে সরকারের মেহমান হয়ে কোলকাতায় অবস্থান করেছেন। মিডিয়া এখন তার কেঁচো খুড়ছে। এবং তাতেই বেরিয়ে আসছে বড় বড় সাপ। তেমনি এক সাপের কাহিনী হচ্ছে, হাসপাতাল ব্যবসার আয়-রোজগার বাড়াতে তিনি এমন সব ঘটনা ঘটাতেন যা নিউ ইয়র্কে চাকা পাকংচারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞাতার কথাই মনে করিয়ে দেয়।‍

জনাব শাহেদ ড্রাইভার ভাড়া করতেন। এসব ড্রাইভারের দল নিজেদের গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতো শহরে্র অলিগলিতে। এবং সুযোগ বুঝে চাপা দিতো পথচারীদের । চাপা দেয়ার পর পালিয়ে না গিয়ে আহতদের নিজেদের গাড়িতে করে নিয়ে আসতো শাহেদের হাসপাতালে। এবং জনাব শাহেদ চিকিৎসার নামে আহতদের কাছ হতে হাতিয়ে নিতেন হাজার হাজার টাকা।

এসব নিয়ে ভাবতে গেলে অনেকের মত আমার ভাবনাও খেই হারিয়ে ফেলে। বেঁচে থাকার অর্থগুলো এলোমেলো হয়ে যায়। মেমোরি লেন ধরে ফিরিয়ে নিয়ে যায় অনেক অনেক বছর আগে। সেই স্কুল জীবনে বাবা আমাকে বিশেষ এক ঘটনায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কোন রাজনৈতিক দল নয়, একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র।
ধন্যবাদ জনাব শাহেদকে। আমার বাবর সত্যবাদিতা নিয়ে আমার এতিদিনের গর্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে।

https://www.kalerkantho.com/online/national/2020/07/13/934214?fbclid=IwAR38ZrA5RhMdaxyXx5-RFZnyMfNvh6RzSV-Ix8jF3oZWWuTy7tT8xbJIAbA

ভালো লাগলে শেয়ার করুন