হিজাব মুক্ত বাংলাদেশ!

Submitted by WatchDog on Monday, December 18, 2017

সকাল গড়িয়ে দুপুর নামতে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্য কষ্টটা গভীর হতাশায় পরিণত হল। হাজার হলেও এক সময় এই গায়িকার অন্ধভক্ত ছিলাম। মহিলার দাবিটা মগজের কোথায় যেনে গেঁথে গিয়েছিল। তাই চাইলেও সড়াতে পারছিলাম না "...বাংলাদেশকে হিজাব মুক্ত করতে হবে" - এমন একটা দাবি এর আগে কেউ কখনো করেছিল কিনা জানা ছিলনা। তাই অবাক হয়েছিলাম। তবে অবাক হয়েছিলাম অন্য একটা কারণে, কারণ আমার মা যতদিন বেঁচে ছিলেন হিজাব নিয়েই বেঁচে ছিলেন। আমি নাস্তিক। পরজন্মের বিশ্বাস হারিয়েছি সেই স্কুল জীবনে। নতুন করে সে বিশ্বাসে চুন-সুরকি লাগানোর চেষ্টা করেনি আজ প্রায় ৪০ বছর। কিন্তু আমার অবিশ্বাসের সাথে হিজাবে কোন সংঘর্ষ দেখিনি জীবনের কোন গলিতেই। ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা বাইরে আমার জন্য হিজাব সব সময়ই ছিল মানুষের মৌলিক অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই কথিত প্রগতিশীলা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা যেদিন ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশকে হিজাবমুক্ত দেখতে চান ধাক্কাটা শরীরে খুব কোমল জায়গায় আঘাত হেনেছিল।...মা।

প্রতিবারের মত এবারও জার্নির প্রাথমিক ধক্কা কাটিয়ে ঢাকার রাজপথে বের হতে চোখে পরল পরিবর্তনটা। হিজাব! মনে হল কোথায় যেন কি একটা ঘটে গেছে...বিস্ফোরণ হয়েছে হিজাব কালচারে। দূর হতে দেখলে মনে হবে সুদান অথবা সোমালায়ীনরা ঢাকা তথা বাংলাদেশ দখল করে নিয়েছে। থ্রি পিস, ফোর পিসের হিজাব...সাবলীলভাবে ওরা মিশে আছে বাংলাদেশের জটিল আর্থ-সামাজিক সমীকরণে। নিজকে প্রশ্ন করলাম; আমি না-হয় প্রবাসে, অনেক বছর পর পর দেশে আসি। কিন্তু এই রেজওয়ানা চৌধুরীরা তো বাংলাদেশেই বাস করেন। প্রতিদিন ঘুম হতে উঠে রাস্তায় নামেন। হিজাবমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নটা কোন জরায়ুতে জন্ম নেয় বুঝতে পারলাম না। নাকি এ দাবী ছিল আওয়ামী বাতাসে পাল লাগিয়ে দেবীর মন জয় করে টু-পাইস কামিয়ে নেয়ার শর্ট রাস্তা! বাস্তবতা হচ্ছে বাতাস এখন উল্টোমুখি। দেবী এখন তেতুল হুজুরদেরও দেবী।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন