ঘোলা পানিতে পদ্মাসেতু

Submitted by WatchDog on Thursday, September 27, 2012

Hasin'a visit to New York

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ৮০ জন ক্যাডার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন আমেরিকায়। নিউইয়র্কস্থ জেএফকে এয়ারপোর্টে একজন বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীকে কিভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয় তা দেখতে এবং বাকি বিশ্বের সরকার অথবা রাষ্ট্রপ্রধানদের আগমনের সাথে তুলনা করতে চাইলে একজন সুস্থ সবল বাংলাদেশির হাতে বোরখা থাকাটা জরুরি। এ এক অবিশ্বাস্য লজ্জাজনক অধ্যায় যা কেবল মধ্যযুগীয় জংলিপনার সাথে তুলনা চলে। ঐ মুহূর্তে ঘটনাস্থলে নিজকে বাংলাদেশি হিসাবে পরিচয় দিতে গায়ের ও চোখের চামড়া গণ্ডারের চামড়া হওয়াটা বাঞ্ছনীয়। স্থানীয় প্রশাসনের জানা আছে এসব কলঙ্কিত অধ্যায়। তাই অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এড়ানোর জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে চোরাই পথে বের হয়ে যেতে বাধ্য করেন ব্লুমবার্গ বাহিনী। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কি বলবেন আমাদের তা জানা আছে। দেশ নয়, বরং আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি মঞ্চে দাঁড়াবেন এবং গর গর করে বলে যাবেন দলীয় সাফল্যের রূপকথা। এমন এক মুহূর্তে তিনি এসব বলবেন যখন বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক ফোরামে একই সরকারকে নেংটা করে বিশ্বকে দেখানো হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রীয় চোরদের কদর্য চেহারা। পদ্মার পানি কিছুটা হলেও স্বচ্ছ হওয়ার পথে পা বাড়িয়ে ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্কে পা রেখেই তা আবার ঘোলা করলেন এবং বললেন বিশ্বব্যাংক দুর্নীতি খুজে পায়নি বলেই ফিরে এসেছে, এবং জটিলতার জন্যে নতুন করে অঙ্গুলি হেলন করলেন ডক্টর মোহম্মদ ইউনূসের দিকে। অর্থমন্ত্রী মাল মুহিত বলতে গেলে হাতে পায়ে ধরে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত এই ব্যাংককে সেতু প্রকল্পে ফিরিয়ে আনার কাজটা ফয়সালা করে ফেলেছিলেন। আবুল হোসেন আর মসিউরদের কপালে চুরির কালিমা লেপন করে সেতুর পথ পবিত্র করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরই কেবল বিশ্বব্যাংক চোখ ফিরিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে পা রেখে ভুলে গেলেন এটা গোপালগঞ্জ নয়, আর বিশ্বব্যাংকও মোহম্মদ হানিফের ব্যাংক নয় যা নিয়ে মিথ্যাচার করে পার পাওয়া যাবে। দলীয় ক্যাডারদের মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালাময়ী ভাষণের একদিন পরেই বিশ্বব্যাংক স্পষ্ট জানিয়ে দিল আবুল-মসিউরদের দুর্নীতির গ্রহনযোগ্য প্রমাণ পাওয়ার পরই কেবল তারা সরে দাঁড়িয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচারের গালে থাপ্পর মেরে বলে দিল পদ্মা সেতুর অর্থায়নে দুর্নীতি দূরে রাখার সরকারী আশ্বাস যথেষ্ট নয়, বরং ব্যাংক নিজে মনিটর করবে দুর্নীতি প্রবাহ।

পড়ুন প্রধানমন্ত্রীর পানি ঘোলা করা বক্তব্যঃ

* দুর্নীতির প্রমাণ দেখতে চাই
* চক্রান্তকারীদের খুঁজতে তদন্ত চলছে

পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়নে ফেরায় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ প্রকল্পে তারা দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলেছেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ দেখার অপেক্ষায় তিনি।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে যেকোনো ধরনের দুর্নীতি অস্বীকার করে প্র্র্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো এক ব্যক্তির কারণে পদ্মা সেতু ঋণ নিয়ে এত কিছু হয়েছে। একটি ব্যাংকের এমডি তাকে (ড. ইউনূস) রাখতেই হবে, এমন শর্ত আমরা মানিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির কথা বলে তারা ঋণ বাতিল করেছিল। শেখ হাসিনা বলেন, কার চক্রান্তে এই ঋণ বাতিলের ঘটনা ঘটল, তার তদন্ত চলছে। বিশ্বব্যাংক প্রধানকে বলেছি, প্রমাণ থাকলে সেটা দেখান। কিন্তু তারা সেটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তদন্ত করে আমার কিছুই পাইনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছি এবং বলেছি, কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা দেখতে চাই। স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সম্মেলন উপলক্ষে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের বলরুমে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দেওয়ান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে আমরা দুর্নীতি করেছি বলে বিশ্বব্যাংকের কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তারা কখনোই ওই প্রকল্পে ফিরত না।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন