এবার থামুন জনাবা শেখ হাসিনা

Submitted by WatchDog on Sunday, December 15, 2013

Sheikh Hasina and Awami League

আওয়ামী ঘরনার এক বন্ধু ফোন করে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন এবং দুঃখ করে বললেন দেয়ালের লিখন পড়তে ভুলে গেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে চারপাশের তোষামোদকারীদের দায়ী করলেন। তাদের জন্যই নাকি প্রধানমন্ত্রীর আজকের এই অবস্থা। যুদ্ধের মাঠে পরাজিত পক্ষকে অনেক কিছুই করতে হয়, বলতে হয়। সাময়িক পিছু হটার কৌশলের মতই শোনালো বন্ধুর মনোলগ। অলি গলিতে লাশ পরছে, দাউ দাউ করে জ্বলছে একটার পর একটা গ্রাম, গঞ্জ, শহর, বন্দর। অনেকটা গৃহযুদ্ধের কায়দায় কাতারভুক্ত হচ্ছে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে। এ সময়ে তোষামোদকারী নামক হরু ভুতের আষাঢ়ী গল্প কেবল মেজাজই বিলা করে দেয় না, বরং জন্ম দেয় ভয়াবহ ক্রোধের। অনেকটা ধমকের সুরেই বন্ধুকে অনুরোধ করলাম এসব বস্তা পচা গল্প থামাতে। শেখ হাসিনার তোষামোদকারীর দরকার হয়না। তিনি যা করছেন বুঝে শুনে নিজ দায়িত্বেই করছেন। জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে হায়েনা বাহিনী লেলিয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করার নক্সা তোষামোদকারীদের কাজ নয়, এ যোগ্য বাবার যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তের ফসল।

কুটিল, জটিল ও সব্জিখোর দাদারা শেখ হাসিনাকে কেবল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়েই ক্ষান্ত হননি,সাথে প্রতিবেশী সাতকন্যার উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বটা দিয়েও সন্মানিত করেছেন। তিতাস নদী খুন তারই যোগ্য প্রতিদান। ভোটের অধিকার হরণ না করলে এ প্রতিদান দীর্ঘস্থায়ী করা কি সম্ভব হবে? এর উত্তর আর কেউ না জানুক প্রতিবেশী বেনিয়াদের ভাল করে জানা আছে। তাইতো সাতকন্যার অঙ্গসজ্জার বিউটিপার্লার বানানো হয়েছে আজকের বাংলাদেশকে। এবং শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তার একক বিউটিশিয়ানের। বাংলাদেশে সৃষ্ট রক্তের ফোয়ারা দিয়ে সাজানো হচ্ছে এদের অর্থনীতির সিঁড়ি। যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত, অবহেলিত আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের মত রাজ্যে অংকুরিত হচ্ছিল স্বাধীনতার দাবি। বিপদ সংকুল জনপদে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচের আর্মিকে লালন করতে বাধ্য হচ্ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সব বদলে দেয় বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ক্ষমতায়ন। ’উপমূখ্যমন্ত্রী’ সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনের ছত্রছায়ায় রাতারাতি তুলে দেন বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা বিদ্রোহী নেতাদের। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের প্রতিদান হিসাবে প্রভুরাও বিউটিশিয়ানকে প্রতিশ্রুতি দেন আমৃত্যু ক্ষমতার।

পনের কোটি মানুষের এ দেশে ভোটাধিকার ও তার প্রয়োগ অনেকটা জাতীয় উৎসবের মত। ঘাত প্রতিঘাত সত্ত্বেও বছরের বছর ধরে দেশের মানুষ এ ক্ষণিক আনন্দ হতে বঞ্চিত হয়নি। কিন্তু বদলে যাচ্ছে সে ধারা। বাবার বাকশাল কায়দায় কন্যা শেখ হাসিনাও গণতন্ত্র ও সংবিধানের নামে মাজার বানিয়ে ধ্যানে বসেছেন। হাইকোর্টের নুরা পাগলার মত সংবিধানের মাতমে আকাশ বাতাশ রক্তাক্ত করে ফেলেছেন। জাতি তথা সমসাময়িক বিশ্বকে বুঝাচ্ছেন শেখ হাসিনার বিকল্প মানেই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ। অথচ নিজ রাজত্বে কায়েম করেছেন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের লীলাভূমি। সরকারী স্পনসরে রাতের আধারে, দিনের আলোতে মানুষ গুম করাচ্ছেন। বেওয়ারিশ লাশের মিছিলে ভাসিয়ে দিচ্ছেন দেশের নদী-নালা, খাল-বিল। গৃহপালিত কুকুরের ভূমিকায় না নামলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের পেছনে লেলিয়ে দিচ্ছেন প্রাইভেট বাহিনী। খুন আর গুম আতংকে ফেরারী হতে বাধ্য হচ্ছেন রাজনীতিবিদগণ। অফিসে তালা, রাজপথ নিষিদ্ধ, মিটিং মিছিল বেআইনী, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সব ফ্রন্টে যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন জনাবা প্রধানমন্ত্রী। এবং বলছেন এ যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উদ্ধারের যুদ্ধ। ৭১ সালের গো আজম ও কসাই কাদেরেদের অপরাধ ও শাস্তির নৌকায় সওয়ার হয়ে নির্বাচনী দরিয়া পাড়ি দেওয়ার কৌশলি নক্সা একে ধরে নিয়েছেন গোটা জাতি আজ বোবা, কালা, আন্ধা ও উনার মত অশিক্ষিত। চুরির বস্তা সহ বমাল গ্রেফতার হওয়া সুরঞ্জিত, বিশ্বচোর আবুল আর সন্ত্রাসের স্বঘোষিত পিতা শামীম ওসমানদের মত বেজন্মা নিকৃষ্টদের সওয়ারী বানিয়ে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাইছেন জারজ এক সংসদ ও তার মন্ত্রিসভা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের জিকির তুলে একদল দলকানা নেত্রীদাসদের বিভ্রান্ত করা গেলেও পনের কোটির সবাইকে এ পথে আনা সম্ভব হবেনা। আশাকরি প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে তার প্রমাণ পেয়ে থাকবেন।

জনাবা প্রধানমন্ত্রী, সময় হয়েছে আপনার পতনের। ইতিহাস স্বাক্ষী দেবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য কতটা নোংরা খেলায় নেমেছিলেন আপনি। সব খেলা-ই এক সময় সাঙ্গ হয় এবং খেলোয়াড়রদের ঘরে ফিরতে হয়। এবার আপনার পালা। অনেক খেলেছেন। কাদের মোল্লার গলায় দড়ি ঝুলিয়ে যদি ভেবে থাকেন পনের কোটি ভোটারের গলায় দড়ি ঝুলিয়েছেন তা হলে ভুল করবেন। অপরাধ ও শাস্তি আইনী ব্যাপার, আর ভোট মানুষের জন্মগত অধিকার। দুটোকে এক করার কোন সুযোগ নেই। নিজের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই বাছাই করার একটাই পথ, নির্বাচন। রাজনীতিতে টিকে থাকতে চাইলে আপনাকেও একই পথে হাটতে হবে।বিচারপতি হাসান, আজিজ, রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন, কাউকে আপনি মানেন নি। তাদের ঠেকানোর জন্য আপনি তাই করেছিলেন আজকের বিরোধীদল যা করছে। সন্ত্রাসের ভুত দেখানো আপনার মুখে শোভা পায়না, কারণ বাংলাদেশের বড় সন্ত্রাসী আপনি নিজে। এবার থামুন। জাতিকে মুক্তি দিন ক্ষমতা পালাবদলের এ অভিশাপ হতে।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন