হ্যালো মিঃ ইয়াংবয়!

Submitted by WatchDog on Tuesday, April 21, 2015

Bangladesh

মাইরি বলছি, এক হাতে জুতা অন্য হাতে ইটা, দেখতে মন্দ লাগছে না। দেশ, কাল, পাত্র সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদের কাছে মনে হবে ইসরায়েলী অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা নতুন করে ইন্তেফাদায় নেমেছে। ভারতীয় ছায়াছবিতে যাদের আসক্তি তাদের কাছে মনে হবে নির্ভীক ও সত্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলিউড একশন হিরো। তবে ইয়ং দাবি করলেও চেহারায় যে ইয়ং ভাবটা নেই তা আপনাকে মানতে হবে। পরিচয় নিয়ে যাদের কনফিউশন নেই তারা চোখ বুজে বলে দিতে পারবে আপনি কে, এখানে কি এবং কেন করছেন। নগর ভবনে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ানো তৃতীয় শ্রেণীর ঠিকাদার এবং রমনা পার্কে ভাসমান পতিতার ভেতর মূলত কোন পার্থক্য নেই। উভয়কেই জীবিকার জন্য ওঁত পাততে হয় এবং ঝোপ বুঝে কোপ মেরে ছিনিয়ে আনতে হয় আহার। আপনি তাদেরই একজন। বড় ভাইদের ছায়ায় বেড়ে উঠা বিভিন্ন ভবনে টেন্ডারবাজ সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য। নিশ্চয় তাদের কেউ আপনাকে এখানে পাঠিয়েছে। আপনার হাতের ইট আপনার বড় ভাইদের টেন্ডার বাক্সের চাবি মাত্র। দিন শেষে অতি উঁচু মহলের কেউ একজন মূল্যায়ন করবে আপনাদের একশন এবং পুরস্কৃত করবে লেভেল অব পশুত্বের মানদণ্ডে। পাশাপাশি আপনার বড় ভাইয়ের ভাগ্য খুলে যাবে। যার ছিটেফোঁটা আপনিও ভোগ করবেন। তা মিঃ ইয়ংবয়, ক্ষমতা তো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয় যাকে আঁকড়ে ধরে আপনি এবং আপনার বড় ভাইরা টেন্ডার বক্সের চাবি আজীবন দখলে রাখবেন। সময় গড়াবে। ক্ষমতার সিংহাসনে বসে আপনাকে যিনি পুরস্কৃত করছেন তেনারও যাওয়ার সময় হবে। কোন এক সুন্দর সকালে নিজকে আবিষ্কার করবেন নগর ভবনের অনাহুত অতিথি হিসাবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যাদের শায়েস্তা করার জন্য আজকে ঢিল ছুড়ছেন তারাই বসবে তখত তাউসে। ভেবে দেখেছেন কি সেদিন কি হবে আপনার?

সম্পদের পাহাড়ে চড়ে আপনার বড় ভাই কোথাও না কোথাও পালিয়ে যাবেন। আপনার রাজা বাদশাহরাও সিংহাসন হারিয়ে সুয়োরানী দুয়োরানীর মত ঘুরে বেড়াবেন বন বাদরে। আজকে যে কাজটা করতে রাস্তায় নামলেন তা কিন্তু ফ্রেমে বন্দী হয়ে আছে। কেউ না কেউ তালিকায় উঠাচ্ছে আপনার নাম এবং পরিচয়। ক্ষমতার বাতাস উত্তরমুখী হওয়ার সাথে সাথে খোলা হবে সে এ্যালবাম। আপনাকে আনা হবে প্রতিশোধের লাইম লাইটে। পাশে যে পুলিশকে দেখছেন একই পুলিশ আপনাকে ধরবে। পা হতে মাথা পর্যন্ত থেঁতলে দেবে। খুব ভোরে ফজরের আজানের ঠিক আগটায় আপনাকে নিয়ে যাবে শনির আখড়ার কোন এক গলিতে। খুব কাছ হতে তিনটা গুলি করবে। রক্তের ফোয়ারায় ভাসিয়ে দেবে ঘটনাস্থল। মাথা হতে গল গল করে বেরিয়ে আসবে মগজ। আপনি উর্ধ্বকাশে তাকিয়ে ভাববেন ঘরে ফেলে আসা নাবালক সন্তানের কথা। লতায় পাতায় বেড়ে উঠা স্ত্রীর কথা। ভেবে উৎকণ্ঠিত হবেন। তবে তার স্থায়িত্ব হবে কয়েক মিনিট। কারণ অল্প সময়ের মধ্যে আপনি চলে যাবেন না ফেরার দেশ। ইতিমধ্যে আপনি শিকার হয়ে গেছেন ক্রসফায়ারের। পুলিশও আপনার মত ভাসমান পতিতা। তারও আহার দরকার। আপনার লাশ হবে সে আহার। যা ভক্ষণ করে সে ডিঙ্গাতে থাকবে ক্ষমতার সিঁড়ি। দেশের নিম্ন ও উচ্চ আদালতের বিচারকরাও বেশ্যা। তারাও রায় দেবে একজন সন্ত্রাসীর দেশ নেই, পরজগতই তার একমাত্র আশ্রয়। আপনার বড় ভাই ততদিনে ঠাঁই নেবে প্রতিবেশী কোন দেশে। তারও বড় ভাইরা আশ্রয় নেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। আর আপনি সন্ত্রাসীর তকমা গায়ে মেখে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের অতিথি হয়ে বিদায় নেবেন পৃথিবী হতে। সন্তান হবে বাবা হারা, স্ত্রী হবে স্বামীহারা। ভাববেন না ছাত্রলীগ যুবলীগই একমাত্র লীগ। ঢিল মেরে আজকে যাদের ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন তারাও কোন অংশে কম যাবেনা। কারণ তারাও ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট-খোর। তাদেরও কেউ কেউ আপনার মত নগর ভবনে ঘুরে বেড়াবে টেন্ডারের আশায়।

একবারের জন্য হলেও ভেবে দেখুন এক হাতে ইটা ও অন্য হাতে জুতা নিয়ে কি করছেন আপনি। ভেবে দেখুন সন্তানের কথা...স্ত্রীর কথা!

ভালো লাগলে শেয়ার করুন