আইনের আইনস্টাইন সুরঞ্জিত বাবুর কেচ্ছা

Submitted by WatchDog on Wednesday, March 30, 2011
Shuranjit Gupta রাষ্ট্রের আইন কানুন আর শাসনতন্ত্রের জ্বালাময়ী ব্যাখ্যা নিয়ে জাতির সামনে ঘন ঘন হাজির হচ্ছেন আমাদের সুরঞ্জিত বাবু। নামে সুরঞ্জিত হলেও কাজে উনি ’মহামান্য’ সাংসদ এবং সংসদের আইন সংক্রান্ত কি জানি এক কমিটির মহাশক্তিধর কে যেন একজন। শুধু রাষ্ট্রের পরিচয় নয় একজন সাধারণ বাংলাদেশির পরিচয় কি হবে এ নিয়ে প্রায়শই ওয়াজ নসিহত করছেন। দুদিন আগে মহাসমরোহে সার্টিফিকেট দিলেন উনি এবং উনার নেত্রীর কোন আপত্তি নাই যদি ’গরু খোর’, ’ ম্লেচ্ছ’ আর ’যবন’ মুচুলমানরা বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে তাদের দৈনন্দিন জীবন। পিতা-কন্যার ’সুশাসন’ বাদে দেশের বাকি শাসনকে জারজ ঘোষনা আর বিগত শাসকদের কবর হতে উঠিয়ে উনার কমিটির সামনে হাজির করার খোদাই দায়িত্ব পালন করছেন আইনের এই মহাপণ্ডিত। গ্রাম বাংলায় একটা কথা চালু আছে, চক চক করলেই সোনা হয়না। কোট টাই পরিহিত সুরঞ্জিত বাবুর বাইরেরটা চাঁদের মত মনে হলেও ভেতরে কিছুটা আসুবিধা আছে। চলুন সময় হাতে নিয়ে বাবুর এই অসুবিধার দুনিয়ায় ঘুরে আসি। কথা দিচ্ছি ভাল লাগবে আপনাদের। সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার সাথে আশাকরি সবাই পরিচিত। সুরঞ্জিত বাবুর আদিবাস এই জেলাতেই। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চাঁদপুর, মজলিশপুর ও করিমপুর মৌজায় নিজের দুই বৈমাত্রেয় ভাই সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৭৫ বিঘা অর্পিত সম্পত্তি গ্রাস করার অভিযোগে অভিযুক্ত আছেন আইনের আইনস্টাইন শ্রীযুক্ত সুরঞ্জিত বাবু। কথিত আছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের এসব অর্পিত সম্পত্তি দখল প্রক্রিয়ায় সুরঞ্জিত বাবু ওরফে অদুরশত কুমার সেনগুপ্ত প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব খাটিয়ে কাজ আদায় করে নিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সৎ মা (পিতার প্রথম স্ত্রী) বৈমাত্রেয় তিন ভাই রবীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, সুবোধ ওরফে সুরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত, সুজিত ওরফে অজিত সেনগুপ্ত স্বাধীনতার অনেক আগেই দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এ কারণে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পিতা দেবন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের মোট সম্পত্তির তিন-চতুর্থাংশ (ভারতে চলে যাওয়া ৩ ভাইয়ের অংশ) শত্রু সম্পত্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়ে যায়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এসব সম্পত্তি প্রথমে শত্রু ও পরে অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু ১৯৭৮ সালে সুরঞ্জিত বাবু ভূমি মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া এক আবেদন পত্রে দাবি করেন যে, তার বৈমাত্রেয় ৩ ভাইয়ের মধ্যে ২ জন বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করেছে। অপর বৈমাত্রেয় ভাই ভারতের বাসিন্দা। সুরঞ্জিত আরও দাবি করেন যে, তার পিতার মালিকানায় ভারতে বেশকিছু ভূ-সম্পত্তি আছে। এ কারণে অতীতে পিতা দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের নামে বাংলাদেশে যেসব সম্পত্তি ছিল সুরঞ্জিত একাই তার উত্তরাধিকার। এমন দাবি তুলে তিনি অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় থাকা ৭৫ বিঘা জমি নিজের নামে অবমুক্ত করার জন্যে আবেদন করেন। ভুমি মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী দফতর সেই আবেদন আমলে নিয়ে একপর্যায়ে এসব সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তির তালিকা হতে অবমুক্ত করে দেয়। দিরাই উপজেলার প্রবীন ব্যক্তিদের মতে, প্রকৃতপক্ষে সুরঞ্জিতের বৈমাত্রেয় ভাইদের কেউই বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করেনি। তাদের তিন ভাই ও মা একসঙ্গে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায়। তাছাড়া সুরঞ্জিতের পিতা দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ভারতে কোন ভূ-সম্পত্তি ছিলনা। তার পূর্বপুরুষদের বসবাস ছিল ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরে। বহুকাল আগে তিনি সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত জনপদ দিরাই বাজারে গিয়ে পল্লী চিকিৎসক হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। প্রাসঙ্গিকভাবে দাদাবাড়ির একজন মুরুব্বির কথা মনে পড়ে গেল। গ্রামের তাবৎ বিচার আচারের মালিক ছিলেন তিনি। উনার নিজের কিছু দোষ ছিল, যার মধ্যে অন্যতম নাবালক ধর্ষন। শাসনতন্ত্র সমুন্নত রাখার সোল এজেন্ট সুরঞ্জিত বাবু কি সেই ব্যক্তি নন যিনি নিজের মা-বাবা, ভাইদের সম্পর্কে ভূয়া তথ্য দিয়ে কোটি কোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি দখল নিয়েছেন ক্ষমতার জোরে? ক্ষমতা নামক আওয়ামী যাত্রামঞ্চের এই নায়ক একজন ভূমি ধর্ষক, প্রতারক। আর যাই হোক একজন মিথ্যুকের মুখে আইনের নসিহত শোভা পায়না। সুরঞ্জিত বাবুর স্থান হওয়ার কথা ছিল নাজিম উদ্দিন রোডের অন্ধ প্রকোষ্ঠে, অথচ ক্ষমতার ভেল্কিবাজিতে আজ তিনি বিসমিল্লাহ উচ্চারণে এনওসি দেওয়ার মালিক। ভণ্ডামিরও একটা সীমা থাকা উচিৎ। http://www.amibangladeshi.org/node/337

ভালো লাগলে শেয়ার করুন