মাহমুদুর রহমান, a slave of his own destiny

Submitted by WatchDog on Thursday, June 17, 2010

Mahmudur Rahman

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টিতে ঈশ্বরের কেন দুই গোলার্ধের প্রয়োজন ছিল তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। পেয়ারের বান্দাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ যেহেতু তাই চাইলেও বোধহয় পাওয়া যাবে না এ প্রশ্নের উত্তর। বাস্তবতা হল, চাই বা না চাই, পৃথিবীটা দুই গোলার্ধে বিভক্ত এবং এটাই এর অন্যতম অলংকার। শীতের পিঠে গ্রীষ্ম, দিনের পিঠে রাত, আলোর পিঠে অন্ধকার, এভাবেই আবর্তিত হচ্ছে মা বসুমতির জীবন। পৃথিবীটা ঘুরছে, সাথে ঘুরছি আমরাও। ঈশ্বরের নির্ধারিত কক্ষপথে আমাদের সাথে আমাদের এত সাধের রাজনীতি ঘুরবে এটাই বোধহয় স্বাভাবিক। অবশ্যই ঘুরছে। রাজপথ হতে সিংহাসন, সিংহাসন হতে রাজপথ, মা বসুমতির কায়দায় চক্কর দিচ্ছে ক্ষমতার কক্ষপথও। এমনটাই বোধহয় ঈশ্বরের লিখন। না হলে মাহমুদুর রহমান নামের এমন জাঁদরেল আদম কে কেন জেলখানায় থাকতে হবে, তাও আবার বিবস্ত্র হয়ে?

আদলতে হাজিরা দিতে এসে সর্ব জনাব মাহমুদুর কি বললেন আসুন তার নিজের মুখ হতেই শোনা যাকঃ

’৯ই জুন আমাকে ক্যান্টনমেন্ট থানায় রিমান্ডে নেয়া হয়। ঔ দিন রাতে পাঁচ-ছয়জন লোক গিয়ে প্রথমে আমার চোখ বাধে। তারপর শুরু হয় নির্যাতন। আপনি একজন নারী, তাও বলতে হচ্ছে আই ওয়াজ আনড্রেসড। কনুইয়ের আঘাতে বসিয়ে দিয়ে খুলে ফেলা হয় আমার প্যান্ট। আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় হ্যাঁচকা টান দিয়ে মারতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আমি। সম্ভবত এর প্রায় দুই ঘন্টা পর যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি দেখি থানার সেকেন্ড অফিসারের রুমে আমাকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তারা আমাকে কোন প্রশ্ন করেনি, শুধু টর্চার করল। পরের দিন বেলা পৌনে ১টার দিকে আবার আমার চোখ বাঁধা হল। আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি একটা জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক, চোখ বাধলেন কেন? তারা বলল রিমান্ডে নাকি এটাই নিয়ম। পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে। কোন স্বাক্ষী নেই। তবু মামলা করা মাত্র আপনারা রিমান্ডে দেন। কিন্তু রিমান্ডের নামে আমাদের উপর যে অত্যাচার হয় তা দেখার কেউ নেই। আল্লাহ আছেন তিনি সবই দেখছেন।‘

আল্লাহ নিশ্চয় সব দেখেন। কারণ এটাই যে উনার কাজ। টেপ রেকর্ডারের মত আল্লাহর ডকুমেন্ট গুলো যদি রিওয়াইন্ড করা যায় আমরা নিশ্চয় স্বাক্ষী হব একই আদালতে অন্য এক আমলার বক্তব্য। পার্থক্য শুধু সময় এবং গদির। আসুন মহিউদ্দিন খান আলমাগীরের মুখেই শুনা যাক উনার নিজের ভাষ্যঃ

‘দিন গেল। রাত এল। থানা হাজতে আমি একা। হঠাৎ ঝনাৎ করে তালা খোলার শব্দে সচেতন হয়ে দাঁড়ালাম। তিনজন কালো মুখোশ পরা লোক আমার সামনে দাঁড়িয়ে। জানতে চাইলাম তারা কে, কারা তাদেরকে পাঠিয়েছে আর আমাকে দিয়ে কি করতে চান তারা। বলল, নামের দরকার নেই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও উপরের হুকুমে তারা এসেছে। আমাকে ছেড়ে দেয়া হবে ৩ শর্তে; বিএনপিতে যোগ দিতে হবে, বলতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে আর বিদেশ হতে ম্যাডামের জন্যে পিএইচডি ডিগ্রী এনে দিতে হবে। ...... উত্তর শুনে তারা খেপা কুকুরের মত চীৎকার করে উঠল। অশ্রাব্য গালি দিয়ে লোকটি এগিয়ে এল এবং মুখে সজোরে ঘুসি মারল। কিল-ঘুষি মুখে, পাঁজরের দুপাশে, বুকে, পিঠে ও ঘাড়ে মারতে লাগল। ... তাদের লাথি পরল আমার তলপেটে, হাঁটুতে আর গোড়ালিতে। আমি বাধা দিলাম। একজন কালো ব্যাগ হতে প্লাস্টিকের বোতল বের করে আমার পায়ুপথে ঢুকাতে চাইল।‘

আমাদের রাজনীতি এ জন্যেই অনন্য, এ জন্যেই মহান কারণ এতে আছে পরিবর্তনের ছন্দ, আছে ঈশ্বরের আঁকা কক্ষপথে আনাগোনা। এ পথেই রাজা হয় ফকির আর ফকির হয় রাজা। যখন সময় ছিল মাহমুদুর রহমান ছিলেন গোলার্ধের রাজা। ছিল আদেশ দেয়ার ক্ষমতা। ছিল কারও পায়ুপথে বোতল ঢুকানোর মনমানসিকতা। ঈশ্বর হয়ত সৃষ্টির সেরাদের নিয়ে খেলতে অন্যরকম আনন্দ পান। তা না হলে এই মাহমুদুর রহমানকে কেনই বা আবার জেল-হাজতে পাঠাবেন! সবই তার ইচ্ছা।

’ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’। এতবড় সাংবাদিক কাম বিজ্ঞ লোকের এমনটা তো জানার কথা ছিল। জানা না থাকলে আশাকরি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। একটা হাফ-সভ্য, হাফ-গণতান্ত্রিক দেশেও রাজনীতিবিদ্‌দের ভাগ্য এভাবে বিবর্তিত হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশে তা হয়। এবং এমনটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। রিমান্ডের যাঁতাকলে দলিত মথিত মাহমুদুর রহমান নিশ্চয় চোয়াল শক্ত করে ভাবতে থাকেন সামনের দিন গুলোর কথা। ভাবেন প্রতিশোধের কথা। মহিউদ্দিন আর মাহমুদ রহমানের দল আমাদের যাই বুঝান না কেন, আসলে এসব রাজনীতি নয়, গনতন্ত্র নয়, দেশ নামের একটা মরা গরুর ভাগাভাগি নিয়ে দুই শকুনের কামড়া কামড়ি মাত্র। এখানে টিকে থাকবে তারা, যাদের থাবার জোড় যত বেশি। টিকে থাকবে তারা, যারা অন্যের পাছায় প্লাস্টিক বোতলের বদলে কাচের বোতল ঢুকানোর ক্ষমতা রাখবে।

মিঃ মাহমুদুর রহমান, ইউ আর দ্যা স্লেইভ অব ইউর ওউন ডেস্টিনি। এনজয় ইউর টাইম।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন