বানিজ্য মন্ত্রীর অবাধ বানিজ্য

Submitted by WatchDog on Sunday, June 21, 2009

সরকারের বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত বানিজ্য মন্ত্রীর আসল কাজটা কি? বাংলাদেশের বর্তমান বানিজ্যমন্ত্রীর কথাবার্তা যারা কাছ হতে মনিটর করছেন তাদের কাছে এ এক মহা রহস্য বলে মনে হতে বাধ্য। মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পেয়ে এ ভদ্রলোক বোধহয় খূশী এবং কৃতজ্ঞতায় হিতাহীত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন, মুখে যা আসছে তাই বলে যাচ্ছেন বাচাল শিশুর মত। শুক্রবার শিশু একডেমিতে বংগবন্ধু শিশু একডেমির সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মন্ত্রী নতুন এক তথ্য দিয়েছেন; ‘ইতিহাস বিকৃত করে যারা মুক্তিযুদ্ব এবং চেতনার বিরুদ্বে অবস্থান নিয়েছে সরকার তাদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নেবে‘। মুক্তিযুদ্ব এবং এর ইতিহাস লেখায় ফারুখ খান সাহেবদের মত মন্ত্রীদের কবে ঠিকা দেয়া হয়েছে ব্যবস্থা নেয়ার আগে জাতিকে এ ব্যাপারে অবহিত করা উচিৎ নয় কি? মুক্তিযুদ্বের বিরুদ্বে কারা অবস্থান নিয়ে ৩৮ বছর পর বাংলাদেশকে পাকিস্থান বানাতে চাচ্ছে তাদের নামও মন্ত্রীমহোদয়কে জানাতে হবে। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং সংহতির সাথে কম্প্রোমাইজ করে যারা রাজনীতি করেন তারা রাষ্ট্রের শত্রু, এমন শত্রুর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড। মন্ত্রী সাহেবের অভিযোগ সহজ বাংলায় অনুবাদ করলে এই দাড়ায়, বিএনপি এবং তার ক্ষমতার তালত ভাই জামায়েত-এ-ইসলাম মুক্তিযুদ্বের চেতনা বিরোধী সুতরাং এদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নেয়ার সময় এসেছে। আরও সহজ করলে দাড়ায়, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি সব দল ইতিহাস বিকৃতকারী এবং এদের সবার বিরুদ্বে সরকার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, অর্থাৎ গনমৃত্যুদন্ড। ক্ষমতার প্রথম দিন হতেই এ অর্বাচীন মন্ত্রী বাংলাদেশের সবকিছুতে নাক গলাচ্ছেন, নিজেই বাদি, বিবাদি এবং বিচারক সেজে শাস্তি দিচ্ছেন। এমন অপরাধ এবং শাস্তির অবকাশ যদি থেকেও থাকে তাতে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের এখতিয়ার কতটা তা বেগানা মন্ত্রীর জানা আছে কিনা তা নিয়ে সন্দহ পোষন করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

প্রতিবেশী দেশের সাথে আমাদের রয়েছে পাহাড় সমান বানিজ্য ঘাটতি, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের রফাতানী বানিজ্যের ঘাড়ে ঝুলছে ১০নং মহাবিপদ সংকেত। মহামান্য বাচাল মন্ত্রীর মুখে এ নিয়ে বিশেষ কোন উচ্চবাচ্য শোনা যায়না, যা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মন্ত্রীর অযোগ্যতা, অজ্ঞতা এবং অদক্ষতাই প্রমান করে। একই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বিডিআর প্রসংগ টেনে বলেছেন এই বাহিনীর পোশাক এবং শ্লোগান সহ অনেক কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব আসছে এবং সরকার কিছুদিনের মধ্যেই এ সম্পর্কে সিদ্বান্ত নিতে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে মন্ত্রী বোধহয় ভূলে যান উনার মন্ত্রনালয়ের ঠিকানা, প্রায়শঃই ভূল করে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা সহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে ঢুকে পরেন, অবান্তর মনতব্য করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীকে বিপাকে ফেলেন। মন্ত্রী এবং মন্ত্রনালয়ের কথা এবং কাজের এই সমন্নয়হীনতা একটা সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার প্রাথমিক আলামত। চলমান রাজনৈতিক প্রবাহ হতে সৎ এবং যোগ্য মন্ত্রী খুজে বের করা খুব একটা সহজ কাজ নয়, এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমস্যা অনুধাবন করা কঠিন নয়। আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞ এবং বড়মাপের নেতাদের প্রায় সবাই র্দুনীতির কারণে মন্ত্রীত্বের তালিকা হতে নির্বাসিত, মন্ত্রীসভার গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী যাদের হাতে পোর্টফোলিও তুলে দিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই যোগ্যতার মাপকাঠি উতড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই তালিকায় স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য।

শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মহাপরিকল্পনায় মহাশূন্যে নিজস্ব স্যটালাইট প্রেরন, গভীর সমুদ্রে বন্দর তৈরী, উরন্ত রাস্তা সহ রয়েছে এমন সব পরিকল্পনা যা বাস্তবায়নের জন্যে চাই যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষের সমাহার। বানিজ্যমন্ত্রী ফারুখের মত এমন অন্তসারশূন্য, অযোগ্য এবং বাচাল মন্ত্রী নিয়ে শেখ হাসিনা কতদূর যেতে পারবেন সময়ই তা প্রমান করবে। ততদিন চলুন উপভোগ করি মন্ত্রী নামের এই ভাড়ের ভাড়ামি।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন