বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বিরোধীতা

Submitted by WatchDog on Monday, May 25, 2009

অর্থনৈতিক গ্লোবালাইজেশনের যুগে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে স্থায়ী বৈরীতা বাধিয়ে প্রতিযোগীতামূলক বানিজ্যিক বিশ্বে টিকে থাকা আজকাল খুবই জটিল, যার প্রমান ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্থান। আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত এবং র্দুনীতিগ্রস্থ দেশগুলোর রাজনৈতিক চালিকাশক্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু র্দুনীতি, এবং এই র্দুনীতিকে জনগণের চোখে ধোকা দিয়ে পাকাপোক্ত করার জন্যেই ব্যবহার করা হয় ধর্ম সহ বিভিন্ন অবান্তর ইস্যু। আমরা চাই কিংবা না চাই, আমাদের তিন দিক জুড়ে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এই পরাক্রমশালী প্রতিবেশীর বিরুদ্বে স্থায়ী বিদ্বেষ উগরানোর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে টিকে আছে ধর্মভিত্তিক উগ্রপন্থী এবং কথিত জাতিয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। যেহেতু এ সব দলগুলো অর্থনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে রাজনীতির মাঠে নেই তাই আপন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যেই ব্যবহার করে ধর্ম এবং ভারত ইস্যু। অশিক্ষা, কুশিক্ষা এবং দারিদ্রকে পূজি করে সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাই করাতে এসব ইস্যু মোক্ষম দাওয়াই হিসাবে কাজ করে আসছে। কিন্তূ সমস্যা হচ্ছে, পৃথিবী এখন আর আগের মত নেই, উপনিবেশ আমলের পুরানো ধ্যান ধারণা মাথায় নিয়ে ১৫ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ তার জনগণকে দুবেলা দুমুঠো আহার দিতে পারবে এ নিশ্চয়তা এখন আর দেয়া সম্ভব নয়।

ভারত তার আভ্যন্তরিন রাজনীতির চাহিদা পূরন করতে গিয়ে বাংলাদেশের মত র্দুবল প্রতিবেশী দেশগুলোর স্বার্থ উপেক্ষা করছে, ফারাক্কা বাধ, টিপাইমূখী বাধ, সীমান্েত কাটা তারের বেড়া, পুশ-ইন কর্মসূচী এ সবই ভোট রাজনীতির ফসল। অন্যদিকে আমাদের রাজনীতি ব্যক্তি স্বার্থের পকেট ভরতে গিয়ে লালন পালন করছে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফা আন্দোলনের মত উগ্র সন্ত্রাষবাদকে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চালান করে সে দেশে সন্ত্রাষ এবং সহিংষতা উস্কে দেয়ার ভেতর সৎ প্রতিবেশীসূলভ মানষিকতা প্রকাশ পায়না। ভারতকে দায়ী করার আগে আমাদের যাচাই করতে হবে এমন পরাক্রমশালী প্রতিবেশী কেন সৎ প্রতিবেশী হতে পারছেনা। পার্বত্য চট্টগ্রামের র্দুগম পাহাড়ি অঞ্চলে ভারতীয় সন্ত্রাষীদের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ ভারত নিয়মিত করে আসছে এবং আমরাও বরাবর অস্বীকার করে আসছি এ অভিযোগ। কিন্তূ বাস্তবতা হল, পড়েশ বড়ূয়াদের মত স্বীকৃত সন্ত্রাষীদের আমরা লালন করছি, ১০ ট্রাক অস্ত্র আনছি প্রতিবেশী দেশে পাচারের জন্যে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগবে, ভারতের সব অভিযোগই কি তাহলে মিথ্যে? একটা জিনিষ আমাদের ভূলে গেলে চলবেনা, শক্তির জোড়ে ভারতের কাছে আমরা নিতান্তই পিপড়ে, এ শক্তি নিয়ে বৈরীতা বেশীদূর এগুতে পারবেনা। রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হতে আমাদের দেশে ভারত বিরোধীতা নিতান্তই লোক দেখানো, এ কথা দিবালোকের মত সত্য আমাদের অর্থনীতি ভারতের কাছে আষ্টেপৃষ্টে বাধা পরে আছে। ভারত হতে বৈধ অবৈধ পথে গরু, চাল, ডাল, তেল, লবন, মসলা, এ জাতিয় নিত্যব্যবহার্য জিনিষপত্র না আসলে আমাদের আভ্যন্তরীন বাজারে কি ধরনের অস্থিরতা দেখা দেবে তা অনুধাবন করতে রাজনীতিবিদ হওয়ার প্রয়োজন পরবেনা।

আওয়ামী লীগ এবং ভারত, এই দুই বাস্তবতাকে এক পাত্রে মিশিয়ে দেশকে যা উপহার দেয়া হচ্ছে তা কেবলি সরু রাজনৈতিক রেশারেশি এবং এর সূফল ঘরে তুলছে জামাতে ইসলামীর মত দলগুলি। আমাদের রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন প্রয়োজন, শতাব্দীর পুরানো বস্তা পচা প্যাচাল ১৫ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোন কাজে আসবেনা, এ সত্যটুকু আমরা যত তাড়াতাড়ি উপলদ্বি করতে পারব ততই আমাদের জন্য মংগল।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন