ফখরুদ্দীন সরকার দেশকে ২০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। দুই বছরের ফখরুদ্দীন সরকার দেশকে ২০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে দ্রুত কাজ করা প্রয়োজন। আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছি। কিন্তু দেশ ও জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করা হলে সহযোগিতার হাত আন্দেলনের হাতে পরিণত হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুর শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপি আয়োজিত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ২৮তম শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ হাসানউদ্দিন সরকার। বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আ স ম হান্নান শাহ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এম এ মান্নান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক মিলন, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আলহাজ সোহরাব উদ্দিন, মীর হালিমুজ্জামান ননী, আফজাল হোসেন কায়সার, অ্যাডভোকেট এমদাদ খান, ড. শহিদুজ্জামান, ডা. মাযহারুল আলম, আহাম্মদ আলী রুশদি, মাহবুবুল আলম শুক্কুর, প্রভাষক বশির আহমেদ, আশরাফ হোসেন টুলু, শাখাওয়াৎ হোসেন সবুজ, সৈয়দ হাসান সোহেল, হান্নান মিয়া হান্নু প্রমুখ।

খালেদা জিয়া আরো বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজনের দুর্নীতি বের হয়েছে। বাকিদেরও বের হবে ইনশাল্লাহ। সব উদ্দিনের দুর্নীতিই বের হবে। এ দেশের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসেছে ছয় মাস হয়েছে । ছয় মাসে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবকিছু একের পর এক দখলে নিয়েছে। দেশের মানুষ শান্তিতে নেই। ছিনতাই, খুন, রাহাজানি ব্যাপক হারে বেড়েছে। আইন-শৃঙ্খলারও ব্যাপক অবনতি হয়েছে।

জাতীয় সংসদে আমাদের কথা বলতে দেয়া হয় না। সংসদে আমাদের আসনগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই হলো আওয়ামী লীগ সরকার। তারা নাকি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে তারা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা দেশে আন্দেলন চাই না। চাই শান্তি ও উন্নয়ন।

খালেদা জিয়া বলেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাকে নিছক বিদ্রোহ বলা যাবে না। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য এটা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী ও র‌্যাবকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ ঘটনায় ছোট আকারে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাদের লোকজনকে রক্ষা করা হয়েছে। বিডিআরদের পোশাক ও নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা চলছে। অবসরপ্রাপ্তদের বিভিন্ন স্থানে বসিয়ে যোগ্য লোকদের ওএসডি, দলীয়করণ ও বদলি করা হচ্ছে। এখন সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সীমান্ত দিয়ে ভেজাল সার, খাদ্যদ্রব্য দেশে আসছে। যার কারণে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।

খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতোবার ক্ষমতায় এসেছে ততোবারই ট্রানজিট দেয়ার চেষ্টা করেছে। জনগণের জন্য তা পারেনি। জনগণের বাধার মুখে নাম পরিবর্তন করে এশিয়ান হাইওয়ের নামে করিডোর দেয়া হচ্ছে। এটা করতে দেয়া হবে না। এ কাজগুলো বন্ধ রাখুন।

বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার জন্য এ সরকারকে বসানো হয়েছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। অন্যরা আজ দেশকে গ্রাস করতে চলেছে। বিদেশি আধিপত্যবাদ, আগ্রাসনবাদ বন্ধ করতে হবে। সুশীল সমাজ আজকে কেন নীরব? তাদের আমরা টিপাইমুখে বাঁধ সম্পর্কে বেশি সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। টিপাইমুখে বাঁধের কাজ বন্ধ করতে হবে। বিএনপি চেযারপারসনের উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে সরকার দেশের বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। সব ষড়যন্ত্র এ দেশ থেকে উৎখাত করা হবে।

যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এম এ মান্নান বলেন, ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। সভাশেষে দোয়া, মিলাদ ও খাবার বিতরণ করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন পীরজাদা মাওলানা এস এম রুহুল আমীন।


গাজীপুরে শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া - যাযাদি

Source:
যায় যায় দিন
http://www.jaijaidin.com/details.php?nid=133959