পুত্রের কাছে পিতার পত্র, পাইবে তারেক রহমান

Submitted by Visitor (not verified) on Tuesday, October 13, 2009

হে ধন্য পিতার ধন্য সন্তান,

সন্তান প্রসবা মাতা যেমন সন্তানের আগমনী বার্তা টের পায়, তোমার পত্রাগমনের বার্তাও আমি আগাম পাইয়া থাকি। চারদিকে হাবিয়ার লু হাওয়া বহিতে থাকে, ইবলিশ আর আজরাইলের দল নাচিতে থাকে পৈচাশিক নৃত্য, সূর্য্যমন্ডল হইতে খসিয়া পরে নতুন একটা নক্ষত্র। আমি বুঝিতে পারি সময় হইয়াছে, আমার বাজানের পত্র আসিবার সময় হইয়াছে। পাপের ভারে নূয্য অন্তরাত্মা থর থর করিয়া কাপিয়া উঠে আমার, আমি ভার্য্যা তরুনী শিহরনে শিহরিত হই। হাবিয়ার কোটি কোটি পাপীর দল সমস্বরে চীৎকার করিয়া উঠে, রে জিয়া, আসিয়াছে! তোর যোগ্য সন্তানের তথাযোগ্য পত্র আসিয়াছে! সদ্য প্রসূত সন্তানের মত সোহাগ ভরিয়া চুম্বন করি তোমার পত্র, গর্ব করি পিতৃত্বের। আজও উহার ব্যতিক্রম হয়নাই। তোমার পত্র আমার হস্তগত হইয়াছে, ধন্য পিতার ধন্য সন্তান!

আহা রে! পুত্র আমার বলাকা সিনেমায় দেখা রোমান্টিক ছবি রোমান্থন করিয়া উথাল পাথাল করিতেছে, ইহার চাইতে বড় সংবাদ একজন লেফট রাইট মার্কা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ জেনারেলের আর কি হইতে পারে! দিন ছিলরে বাপধন, বড় আদরের দিন ছিল সেইগুলি। তুমি দেশে ফেরা লইয়া ব্যতি ব্যস্ত হইয়া পরিয়াছ, জানিয়া আশংকিত হইতেছি। মান্যবর হাবিল কাবিল ফেরেশতাদের সহিত আলাপ পূর্বক জানিতে পারিলাম এই জনমে তোমার আর দেশা ফেরা হইবেনা। সৃষ্টিকর্তা ইহাই তোমার ভাগ্যলিপিতে লিখিয়া রাখিয়াছেন। বাজান, লন্ডনের আমিনুদ্দিনের সাথে তোমার পরিচয় হইয়াছে কি? হ্যাঁ, আমি রেডফোর্ট রেস্তোরার মালিক সিলেটী আমিনুদ্দিনের কথা বলিতেছি। এই উদ্দিন মুয়া-ফুয়া উদ্দিনদের বংশধর নহে, খাটিয়া খাওয়া মানুষের বংশধর। অতি অল্প বয়সে আমিনুদ্দিন সিলেট হইতে লন্ডন পাড়ি জমাইয়াছিল ভাগ্যের সন্ধানে। পরিশ্রম করিয়া বড় হইল, জমানো টাকা দিয়া নিজে রেষ্টুরেন্ট বানাইল। বাকি সব সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। এই ইচ্ছার বলেই আমিনুদ্দিন আজ রেডফোর্ট রেস্তোরার মালিক যেইখানে আহার করিতে গেলে স্বয়ং রানীকেও আগাম বুকিং লাগাইতে হয়। আমার উপদেশ থাকিবে, এই আমিনুদ্দিনের সাথে অতি সত্ত্বর মোলাকাত কর। হাতে পায়ে ধরিয়া থালা-বাটি পরিস্কারের একখানা চাকুরী যোগাড় কর। সামনে যেই দিন দেখিতেছি তোমাদের বাচিয়া থাকাটাই হইবে মহা কষ্টের। এই পরশ্রমের বদৌলতে যদি একখান ছোটখাট রেস্তোরা বানাইতে পার সময় হইলে ঐখানে তোমার আম্মাহুজুর রাধুনী হিসাবে যোগ দিতে পারিবে। আরও যোগ দিতে পারিবে সিফিলিস মুক্ত তোমার বেজন্মা ভাই। মনে রাখিও, কিছুদিন যাইতেই তোমার চুরি-চামারীর থাইবদারের দল তোমাকে কলার খোসার মত ছুড়িয়া ফেলাইবে। টাকারে বাপধন, এই টাকাই তোমাদের নেতা মহানেতা বানাইয়াছে। আত্তরমারী টাকা যেইদিন তলানীতে পৌছাইবে তুমি তারেক রাতারাতি বনিয়া যাইবে চোরা তারেইক্কা। সেই দিন কি বহুদূরে? তোমার কাছে মনে হইলেও তোমার পিতার কাছে নহে!

মুয়া-ফুয়া আসলে তোমাদের চোরা পরিবারের জন্যে দুঃস্বপ্ন মাত্র, বাস্তবে তাহাদের কোন অস্থিত্ব ছিলনা। এই উদ্দিনদের লইয়া তোমরা হেলুসিনেশনে ভুগিতেছ। মুয়া-ফুয়াদের চেহারায় আসলে আজরাইল আসিয়াছিল তোমাদের গাবুইরা মাইর দিতে। ক্ষমতার মসনদে বসিয়া তোমরা ভূলিয়া গিয়াছিলে আজরাইল বলিয়া কেউ একজন আছেন। ঈশ্বরের তাই গোস্বা হইয়াছিল। হয়ত যতদিন বাচিয়া থাকিবে দুঃস্বপনের মত মুয়া-ফুয়ারা হাজির হইবে সাক্ষাত যমদূতের বেশে। আমাবস্যা রাইতে তোমার হাড্ডির জোড়াগুলি যখন ব্যথা করিবে, শরীরে যখন পানি নামিবে, কোমর যখন অচল হইয়া পরিবে, ইয়া নফসি ইয়া নফসি রবে আকাশ বাতাস কাপাইয়া তুলিও। কে জানে, হয়ত ঈশ্বরের আরশ পর্য্যন্ত তোমাদের কান্না পৌছাইবে, তিনি সদয় হইয়া তোমাদের মুয়া-ফুয়া রোগ হইতে মুক্তি দিবেন । তবে ঐ জল্লাদদের কথা মনে হইলে পরনের কাপড় নষ্ট করিওনা, একজন জেনারেলের মান ইজ্জত লইয়া টান দিবে তাহা হইলে।

তোমাকে আনন্দের সহিত জানাইতে পারিতেছি, শেষ পর্য্যন্ত মোলাকাত হইল আমার এবং তোমার আম্মাহুজুর পরিবারের অর্থমন্ত্রী সিলেটের চোরা সইফুরের সহিত। হাবিয়ায় হাজির হওয়া মাত্র বাংলাদেশের এই অঘোষিত মালিক সিলেটী ভাষায় কিচির মিচির করিয়া কি যেন বলিতে শুরু করেন। আজরাইল হুজুরেরও বুঝিতে অসূবিধা দেখা দেয়। তাৎক্ষনিক ভাবে আমাকে তলব করা হয় ভাষা অনুবাদের জন্যে। আমি উদ্বার করি উনার ভাষা। আসলে উনি একটা শব্দই বার বার উচ্চারন করিতে ছিলেন, ’টেখ্যা’, যাহার বাংলা অনুবাদ হইল টাকা। এই চোর সাড়াটা জীবন শুধু টাকা টাকা করিলেন, মরিয়াও টাকাকে তালাক দিতে পারেন নাই। আজরাইল বুঝিতে পারিয়া চোরার মুখের ভিতর হাত ঢুকাইয়া উদর হইতে কলিজাটা এক টানে বাহির করিয়া আনেন। আমরা অবাক হইয়া দেখিলাম সইফুরের কলিজায় কোন রক্ত মাংস নাহি, শুধুই টাকা। লাল টাকা, নীল টাকা, সাদা টাকা, মালেশিয়ার রিংগীত, সিংগাপুরী ডলার, থাইল্যান্ডের বাত, আরও হরেক দেশের হরেক কিসিমের টাকা। লজ্জায় আমার মাথে হেট হইয়া গেল।

দ্বিতীয় খবর হইতেছে, তোমার নানী, বিশ্ব চোরাই সমিতি হাবিয়া শাখার আজীবন সভানেত্রী, সৈয়দা তৈয়বা খানম আমার আশে পাশে কথাও ঠাই পাইয়াছেন। ঈশ্বর পুতুল কলির পাশের কলিতে এই সভানেত্রীকে প্রতিষ্ঠিত করিতে চাহিয়াছিলেন। আমার পৃথিবী টলিয়া উঠিল, আমি প্রথমে আজরাইল বাবাজীর হাতে পায়ে ধরিয়া কান্না কাটি করিয়া বলিলাম, ’আমি জিয়াউর রক্তের মাষ্টার, চুরি চামারীর নহে, দূরে রাখুন এই নষ্টাকে‘। আজরাইল রাজী হইলেন। তারপর ১২০০ ইঞ্চি টিভিতে আমাকে দেখানো হইল কি করিয়া এই বৃদ্বা মরণ বিছানায় শুইয়া দিনাজপুরের আবাল বৃদ্ব বনিতাদের মাস্তান দিয়া উচ্ছেদ করিয়া তাহাদের ভিটা মাটি দখল করিয়াছেন। লজ্জায় মাথা হেট হইয়া গেল।

তুমি বিডিআর চাচুদের কুশলাদি জানিতে চাহিয়াছ। তাহাদের আমার কাছে ভিড়িতে দেওয়া হইতেছেনা। বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাইতেছি আমি। তুমি সাবধান থাকিও। জলিল চোরার সাথে তোমার বাতচিতে আমি অবাক হই নাই। এক চোর অন্য চোরের সাথে আলাপ করিবে না ত সাধূর সাথে আলাপ করিবে?

বাবা, যৌবন কালে অনেকেই অনেক অপকর্ম করিয়া থাকে। ইহা লইয়া বিশেষ বিচলিত হইওনা। চিকিৎসার দরকার হইলে আমার পাকিস্থানী বন্ধু আসিফ আলী জারদারীর সহিত যোগযোগ করিও। সেও একই রোগে ভুগিতেছে।

আজ শেষ করিলাম। আজরাইল আসিবেন একটু পর। আমাকে বটি কবাব বানানো হইবে। বাপধন! আকাশে ঝড় উঠুক, সমুদ্রে সূনামী আসুক, সমগ্র বাংলাদেশ ৫টনে তলাইয়া যাউক, তোমার পত্র যেন কোথাও হোচট না খায়। সব সময় পত্র লিখিও। রক্তের দাপাদাপি আর পকেটের টাকা কমিয়া আসিলে তোমার অবস্থা আমার মতই হইবে, সুতরাং ইচ্ছা করিয়া পিতাকে ইগনোর করিওনা।

ইতি,
হতভাগা পিতা জিয়াউর র
পুতুল কলি, দোজখ-এ- হাবিয়া

ভালো লাগলে শেয়ার করুন