কালো টাকা সাদা এবং ১০% শুভংকরের ফাকি...

Submitted by WatchDog on Saturday, June 13, 2009

দেশীয় রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে চুরি এবং এই চুরিকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতাহীন রাজনীতি। আমি মনে করি শুধু কালো টাকা সাদা নয় বরং চুরিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে এ পথে আয়কৃত অর্থকে দেশীয় অর্থনীতিতে স্থায়ীভাবে স্বাগত জানালে এক ঢিলে অনেক পাখী মারা সম্ভব হবে। প্রথমত, রাজনীতিবিদ্‌রা চুরি চামারি শেষে দিনান্তে বাড়ি ফিরে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন, ১/১১'র দুঃস্বপ্ন তাদের তাড়িয়ে বেড়াবেনা। দ্বিতীয়ত, আমাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ভূত হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাবেনা। তৃতীয়ত, আমাদের মাথাপিছু বার্ষিক আয় উত্তরমূখী যাত্রা শুরু করবে। এ ধরনের অর্থ বাজারে বিনিয়োগ হলে সমাজে চরম বৈষম্য এবং নৈরাজ্যের পাশাপাশি আইন শৃখংলা পরিস্থিতীর ব্যাপক অবনতি হবে এবং তা দেখভাল করার জন্যে পুলিশ সহ অনেক দপ্তরে ব্যপক চাকরীর সম্ভাবনা তৈরী হবে। পুলিশ মানেই লারেলাপ্পা মার্কা চুরি, আর চুরি মানেই নতুন নতুন চাকরী...দেশে জ্যামিতিক হারে কমতে থাকবে বেকারত্ব।

থাইল্যান্ডের কথা মনে আছে আপনাদের? চরম দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে সে দেশের জনগন হাবুডুবু খাচ্ছিল বাচামরার লড়াইয়ে। দেশটির রাজা চমৎকার এক উদ্বার পরিকল্পনা নিয়ে জাতির সামনে হাজির হন। রাজা দেশের মহিলাদের সামনে হাতজোড় করে বিনীত অনুরোধ করেন বেশ্যাবৃত্তিতে নাম লেখাবার জন্যে। রাজার আদেশ শিরোধার্য, শুরু হয় রাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় পতিতাবৃত্তি। বিদেশ হতে পতিতাখেকোর দল মিছিল করে আসতে শুরু করে ব্যাংককে, সাথে আসতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রা। এভাবেই শুরু হয় নতুন থাইল্যান্ডের যাত্রা। একটা পর্য্যায়ে এসে রাজা নতুন আবেদন নিয়ে হাজির হন দেশবাসীর সামনে, অনেক হয়েছে বেশ্যাবৃত্তি, এবার অর্থনীতির ভীত গড়ার পালা। ভাল-মন্দের বর্তমান থাইল্যান্ডের চিত্র আমাদের চোখের সামনে।

থাইল্যান্ডের বেশ্যাবৃত্তিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চুরি দিয়ে প্রতিস্থাপন করলে কে জানে আমাদের ভগ্যাচাকাও হয়ত আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাতে সাহায্য করবে।

On a serious note; ক'মাস আগে মার্কিন ইন্স্যুরেন্স জায়ান্ট AIG'কে Chapter 11 (দেউলিয়া) হতে রক্ষার জন্যে ওবামা সরকার বিলিয়ন ডলার ট্যাক্স মানি সহায়তা দিতে বাধ্য হন। এ কর্পোরেট জায়ান্ট এবং তার এক্সিকিটিভরা পুরানো অভ্যাস পরিত্যাগ না করে ভিক্ষার টাকা হাতে পেয়েই লাখ লাখ ডলারের বোনাস নিজদের মধ্যে ভাগা ভাগি করে নেন। টনক নড়ে ওবামা সরকারের, তাত্ত্বিক অর্থে দেয় টাকার উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন ছিলনা, বিধায় সরকার আশ্রয় নেয় বাকা পথের। শতকরা ৯০ভাগ কর ধার্য্য করা হয় বোনাসের উপর। পরের ধনে পোদ্দারী করার মজ্জাগত অভ্যাসে ছুড়ি চালিয়ে ওবামা সরকার বুঝিয়ে দেন দিন বদলের সময় এটা। প্রাসংগিক ভাবে বাংলাদেশের অবৈধ আয়ের অর্থে মাত্র ১০ভাগ কর না বসিয়ে তা অনেক বেশী করে চোরদের সামনে প্রকাশ করলে রাষ্ট্রীয় চোরের দল তা গিলতে বাধ্য হত। সমস্যা হচ্ছে আইন প্রনয়নকারীদের প্রায় সবাই চোর including the PM। মুহিত সাহেব ক'দিন আগে কালো টাকা সাদা করার ব্যবসার চরম বিরোধি ছিলেন, তাহলে আমরা কি ধরে নেব প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং হস্তক্ষেপ করেছিলেন সিদ্বান্ত বদলাতে? সময়ই তা প্রমান করবে।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন