একজন বিচারপতি, একজন মন্ত্রী ও বাংলাদেশের বিচার বিচার খেলা...(রঙ্গ রসের গল্প)

Submitted by WatchDog on Wednesday, December 18, 2013

Bangladesh Politics

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ... এক নাগাড়ে বেজে চললো লাল ফোনটা। পিউবিক হেয়ার ট্রিমিংয়ে ব্যাস্ত আইন প্রতিমন্ত্রি সেদিকে চোখ ফেরানোর তাগাদা অনুভব করল না। প্রাইম মিনিষ্টারের সাথে একটু আগে কথা হয়েছ, বাকি কারও ফোন নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই। তাই সময় নিয়ে প্যান্টের তলদেশের কাজটা শেষ করল।

আইন প্রতিমন্ত্রী (আপ্র) : আপনে কেডা?

ফোনের অপরপ্রান্তঃ আমি এটর্নী জেনারেল (এজে)।

আপ্রঃ জেনারেল মারানোর সময় নাই। কি কইবা জলদি কও।

এজেঃ সিদ্ধান্ত দরকার।

আপ্রঃ সব সিদ্ধান্ত যদি আমার দিতে হয় কোন সাওয়ার কাজে তোমারে রাখা হইছে?

এজেঃ আকাশজিৎ নামের ঐ মালুর কেইসের রায় দরকার।

আপ্রঃ তুমরা সব হালায় চুতিয়া। নিজে কোন দায়িত্ব নেওনা। সিংহাসন গেলে যাতে বনবাসে না যাও তার জন্য আমার ঘাড়ে বন্দুক রাখতাছ। সব কথা রেকর্ড করতাছি। দরকার অইলে হাটে হাড়ি ভাইঙ্গা দিমু। তা প্রেসিডেন্টের লগে কথা কইছ?

এজেঃ হ কইছি।

আপ্রঃ তয় ঠিক আছে। ঝুলানোর রায় দিতে কও।

এজেঃ ইডা কি কইলেন? নিজেগো মাইনষেরে আমরা ঝুলামু? আপনে কি নিশায় আছেন?

আপ্রঃ আমি তুর স্ত্রীর সাথে (শ্রবণ অযোগ্য) প্রস্তুতি নিতাছি... যা কইছি তা কর।

খটাস!

বিচারপতি এবিএম নাজিমুল হক (এনাহ): স্যার, সময় গড়াইতাছে। কি করমু বুঝতাছিনা। সিদ্ধান্ত কি হাতে পাইছেন?

এজেঃ ঐ খা* (শ্রবণ অযোগ্য) পুত, হাতে পাইছি মানে? সিদ্ধান্ত দেওনের মালিক আমি। হাতে পাওনের কথা মাথায় আইলো কেম্ভে?

এনাহঃ না, মানে আপনে নিজেই একটু আগে কইলেন উপরের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন, তাই। ভুল হইয়ে গেছে বোধহয়, ক্ষেমা কইরা দিয়েন।

এজেঃ যা দিলাম ক্ষমা কইরা। শোন, আমি সিদ্ধান্ত দিতাছি ঝুলানের।

এনাহঃ লা হাওলা অলা কুয়াতা ইন্নালিল্লাহে রাজেউন.. ইডা কি কইলেন? হেগো গলায় দড়ি লাগানোর রায় দিমু আমি? আপনে হুসে আছেন তো? আমার বার বছরের মাইয়াডার জীবন নষ্ট কইরেন না। হেয় লেখাপড়ায় ভাল। বড় হইয়া এজে হইতে চায়।

এজেঃ যেইখানে আমি কইতাছি ফাঁসী এইখানে তুই কথা কওনের কিডা?

এনাহঃ সব বুঝলাম। তয় স্বরাষ্ট্র দপতর থেইক্কা যে রায়টা পাঠাইলো তার কি হইব?

এজেঃ কস কি! রায়ডা পড় দেখি!!!

এনাহঃ "ঘটনাকালীন সময়ে আকাশ নেশাগ্রস্ত আছিল। হাতে ছিল জামাতি গো দেয়া অস্ত্র। লীগের পুলাপাইন নম্র হইয়া অনুরোধ করল, ভাই তুই হিন্দুর পু্‌ত, আমাগো দলের খত দেওয়া সদস্য। তুই ভাই হাতে অস্ত্র নিয়া কি করবার চাইতাছস? এই কথা বলার সাথে সাথে বিকাশ পকেট হইতে একখান সাব-মেশিনগান বাইর করল এবং ঠা ঠা কইরা গুলি করা শুরু করল। গুল্লির বৃষ্টিতে চারদিক আন্ধার হইয়া গেল। ঘটনার অনতিদূরে ঘাপটি মারা জামাত শিবিরের ক্যাডাররা আন্ধাইরে দাও কুড়াল লইয়্যা বিকাশের উপরে ঝাপাইয়া পরল। লীগের ছাত্ররা জামাতিগো ধাওয়া দেওয়ায় হেরা পালাইল। সাথে সাথে চারদিক ফর্সা হইয়া গেল। ফর্সায় উপস্থিত দর্শকরা কেবল লীগের পুলাপাইন দেখলো ও ভাবলো হেরা খুন করছে। আসল ঘটনা হইল, জামাত-শিবিরের ফেইল্যা যাওয়া অস্ত্র লীগের পুলাপাইন হাতে নিয়ে পরখ করতেছিল। দৈবক্রমে চারদিক ফর্সা হইয়া যাওয়ার মানুষ ভুল বুঝছে। লীগের সবাই নিরপরাধ, দুধের মত টলটলা পরিস্কার। তাই হেগোরে খালাছ দেওয়া হইল"

এজেঃ কাহিনী একখান বানাইছে বটে। হা হা হা হা... না, স্বরাষ্ট্র ফরাষ্ট্র চলবনা। কথা হইছে আসল জনের লগে। তাইনে কইছে ঝুলাইতে। সময় এখন খারাপ। কাদিরার ফাঁসী লইয়্যা দুনিয়া ক্যাচাল করতাছে। এই মুহূর্তে লীগের পুলাপাইনরে খালাছ দিলে শরম দিব।

এনাহঃ তাইলে কি আদেশটা ফাইনাল কইরা দিমু?

এজেঃ হ হ বাপধান দেও। কতা এত কম বুঝলে দেশ চালামু কেমনে? তয় ভয় পাইওনা। লীগের পুলাপাইন ও হেগো বাপ-মার লগে কতা হইছে। ফাঁসী হইব নামে, কামে না। কয় মাস গেলে মানুষ ঠান্ডা হইব। আকাশরে কুত্তা দিয়াও কেউ চু (শ্রবণের অযোগ্য) না। তহন ফাহমিদ মিয়া হেগো মাপ কইরা দিব। জেল হইতে বারাইলে কিছুদিনের লাইগ্যা আগরতলায় পাঠানো হইব।

এনাহঃ কুন ফাহমিদ মিয়া?

এজেঃ আরে বেকুবের বাচ্চা আধাকুব, আংগো ফাহমিদ মিয়ারেও চিনসনা? প্রিসিডিন্ট ফাহমিদ মিয়া।

এনাহঃ তওবা তওবা এত বড় ভুল করলাম! ঠিক আছে ঝুলানোর রায় দিয়াই এই বিচার শেষ করলাম। তয় একখান কতা, আমার প্রমোশনডার কি কিছু করা হইব এই যাত্রায়?

ভালো লাগলে শেয়ার করুন