জরোনামো...জরোনামো...উই গট বোথ গ্রামীন এন্ড মোহম্মদ ইউনূস!!!

Submitted by WatchDog on Thursday, November 7, 2013

Dr. Yunis

ক্রিং ক্রিং ক্রিং... ফোনের কর্কশ আওয়াজে বারান্দার কাক গুলো পর্যন্ত কা কা করে উঠল। আজ সকাল হতে মেজাজ চড়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর। উজির নাজিরদের তৈলমর্দন ইদানিং হীরক রাজ্যকেও হার মানাচ্ছে। তাই ত্যাক্ত বিরক্ত। গোটা দশেক ফোনের ভেতর কোনটা বাজছে তাও ঠাউর করতে পারলেন না। রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে লাল ফোনটার দিকে তাকালেন এবং কিছুক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। মনে মনে কি আওড়ালেন তা প্রজাতন্ত্রের বাসিন্দাদের না জানাই ভাল। রাজত্বের শেষ দিকে নিয়োগ প্রাপ্ত হাইকোর্ট-সুপ্রীমকোর্টের বিচারকরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ খুঁজছেন। একান্ত আপন মুহূর্তে নেত্রী কি বললেন এ নিয়ে মুখ খুললে এসব বিচারকদের বলির পাঠা হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। তাই প্রধানমন্ত্রীর মুখের ভাষা ইগনোর করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আসুন তাই করি। দিনের এ সময়টা রবীন্দ্র সংগীতের জন্য বরাদ্দ থাকে। উজির নাজির সবার জানা আছে এ ফ্যাক্টর। তারাও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে সংসদে আইন পাশ করেছেন। পড়ন্ত বিকেলে প্রধানমন্ত্রী কবি গুরুর ধ্যানে বসবেন এটা এখন রাষ্ট্রীয় আইন। এর বরখেলাপ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সর্বোচ্চ একত্রিশ বছরের জেল। মোজাম্মেল বিচারকের লেখা এ আইনে মরহুম জিল্লুর রহমানের সই পর্যন্ত আছে। আইনে বলা আছে, কবি গুরুর ধ্যানে ঘন্টা খানেক সময় ব্যায় না করলে সরকার প্রধানের মগজে বাঁধা আসে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে অসুবিধা হয়। সবকিছু আউলা ঝাউলা হয়ে যায়। কি করতে কি করেন তার ঠিক থাকেনা। এ আইন আরও নিশ্চিত করে, জাতির জনকের কন্যার ধ্যান জাতির জন্য বাধ্যতামূলক। এ ধ্যান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্বত করে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করে। এবং এর বিরোধীরা কেবল রাষ্ট্রেরই শত্রু নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী রাজাকারদের বংশধর। জেনে শুনে আইন কে লঙ্ঘন করছে তা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী। ইউজার আইডিতে মাল মুহিতের নাম দেখে নিমিষে পালটে গেল উনার চেহারা। মাল মুহিত কারও নাম হতে পারে মগজে ঢুকা মাত্র খেক খেক করে হেসে উঠেন। ছোঁ মেরে রিসিভারটা তুলে নিলেন।

- আফনের খবর খিতা, বালানি? ফোয়া, ফুরি বালানি?
- আপনেরে এত কইরা অনুরোধ করলাম বাংলা কইতে, আর আপনে করেন সিলেটি প্যাঁচাল। মাতৃভাষা না পারলে হিন্দিতে বাত করেন। আমার ভাল দখল আছে ঐ ভাষায়। আল্লার দোহাই লাগে সিলেটি কইয়েন না। আমি বুঝিনা।
চোয়াল শক্ত হতে গেল অর্থমন্ত্রীর। মনে মনে এই ঘাগু গবুচন্দর কি ভাবলেন তা প্রজাতন্ত্রের বাসিন্দাদের জানতে অসুবিধা নেই।
‘আন-এডুকেটেড রাবিশ’ এমন একটা রচনার এক লাইনও যদি প্রধানমন্ত্রীর কানে যায় কেবল মাল মুহিতের মন্ত্রীত্বই যাবেনা, বরং মোজাম্মেল বিচারকদের গিলোটিনে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। আসুন এ যাত্রায় ক্ষমা করে দেই মাল নামের এই মুহিতকে।
- ইউর এক্সেলেন্সি, আই হ্যাভ আন-প্রিসিডেন্টেড গুড নিউজ ফর ইউ।
- কন, কন, চালাইয়্যা কন।
- জরোনামো, জরোনামো। উই গট হিম।
- কার কথা কইলেন, বিন লাদেনের? পুরানো খবরে আমার আগ্রহ নাই। নতুন কিছু থাকলে কন। না থাকলে ওয়ালাইকুমসালাম। আমাকে এখন রাষ্ট্রীয় ধ্যানে বসতে হইবে।
- উই গট দ্যাট বাস্টার্ড। আই মিন ইউনূস মিয়া এন্ড হিজ গ্রামীন ব্যাংক গং। আই এম প্রাউডলি হ্যান্ডিং ওভার বোথ অব দ্যাম টু ইউর ডিসপোজাল। টিয়ার হিম ডাউন, ডিস্পোজ হীম ইন ডার্ট এন্ড মেইক আস হ্যাপি।
- আপনে ইউনূসরে ধরছেন, কথাটা বুঝলাম না। হেরো তো আমি আগেই ধরছি। নতুন কইর‌্যা কি করলেন হে তথ্য বয়ান করেন।
- এস্যাম্বলি হেজ এডাপটেড দ্যা গ্রামীন ব্যাংক অর্ডিন্যান্স এন্ড দ্যা ব্যাংক ইজ নাও আন্ডার আওয়ার উইংস। আই এম গোইয়ং টু গেট রীড অব দৌস খামের (কাজের) মাতারি ডাইরেক্টরস জরিনা, জুলেখা। দিস উইল বি মাই নমিনেশন গিফট ফর ইউ।
- ব্রাভু মিঃ মাল, ব্রাভু। গুড যব। কাইল আপনের সাথে আলাপ হইবে। কয়টা জায়াগায় ফোন কইরতে হবে, তাই রাখলাম।
পৃথিবীটা বেজায় আনন্দময় মনে হল প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ মুহূর্তে ভীষন খুশি লাগছে উনার। শত্রু কাবু করার মিশন এটাই প্রথম নয়। কিন্তু ঘরের কোনায় বেড়ে উঠা এত বড় শত্রু নিধন এই প্রথম। গণভবনের মূল আয়নার সামনে দাঁড়ালেন তিনি। মুচকি একটা হাসি দিলেন এবং চিৎকারে ফেটে পরলেন, ’কোথায় আজ দকতর মুহাম্মদ ওউনূস? ইচ্ছা করেই বিকৃত করলেন নামটা।

সন্ধ্যা নামতেই অতিথির পদভারে মুখরিত হয়ে উঠল গণভবন। শুভ্রপীর সালমান, সেতুখেকো আবুল, কালো বিড়াল সুরঞ্জিত সহ অনেকেই দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে। প্রধানমন্ত্রী উৎফুল্ল হয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করলেন। ডিনার শেষে পদ্মাসেতুর উপর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিলেন। গ্রামীন ব্যাংক অর্থায়ন করবে পদ্মাসেতু। বিদায়ী আবুল হোসেন হবেন সেতু বিষয়ক মন্ত্রি। সেতু অর্থায়ন কমিটির প্রধান হবেন বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, উপদেষ্টা হিসাবে থাকবেন জনাব মোদাসসের হোসেন। পাশাপাশি গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান ও চেয়ারম্যান হিসাবে খুব শীঘ্র যোগ দেবেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব সালমান এফ রহমান। উপদেষ্টা হিসাবে জয়েন করবেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সিটিং সভাপতি এবং যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন