আমৃত্যু কারাদন্ড!

Submitted by WatchDog on Thursday, September 18, 2014

মৃত্যুদন্ডই কি অপরাধের একমাত্র শাস্তি? আমৃত্যু কারাবাস কি কোন শাস্তি নয়? সাইদীর সম্ভাব্য ফাঁসী নিয়ে যারা উল্লাসের প্রস্তূতি নিচ্ছিলেন তাদের প্রতিক্রীয়া দেখে মনে হচ্ছে পরিবর্তিত শাস্তি যেন তার মুক্তি সনদ। মনে হচ্ছে উচ্চ আদালত তাকে মুক্তি দিয়েছে এবং খুব শীঘ্রই মহাসমারোহে বেরিয়ে আসছেন এই অপরাধী । কাদের মোল্লাকেও আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়েছিল। এবং রায় নিয়ে আদালত হতে যেদিন বেরিয়ে আসেন 'ভি' সাইন উচিয়ে নিজের বিজয় ঘোষণা করেছিলেন। অর্থাৎ ফাঁসী বাদে যে কোন শাস্তি আসামী পক্ষের জন্য বিজয়ের শামিল। সমস্যাটা কোথায়?

সমস্যা আমাদের বিচার ব্যবস্থা। দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকরা দেশের উচ্চ আদালতে ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষা করেন মাত্র। সে বিবেচনায় যাচাই করলে নিশ্চয় দেলোয়ার হোসেন সাইদীর নতুন রায় তার জন্য বিশাল এক বিজয়। কাদের মোল্লাও জানতেন জানে বেঁচে থাকলে জেলখানার চৌহাদ্দিতে তাকে বাকি জীবন পচে মরতে হবেনা। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালা বদল হলেই বদলে যাবে সবকিছু। একই আদালতের স্বপক্ষীয় বিচারকরা নতুন করে রায় লিখবেন এবং সসন্মানে তাদের মুক্তি দেবেন। তাই বুঝে শুনেই মোল্লা সেদিন ভিক্টরি সাইন দেখিয়েছিল। দেলোয়ার হোসেন সাইদীর ব্যপারটাও একই রকম। গায়ের জোরে বন্দুকের নলের মুখে ৫% ভোটারের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত এই অবৈধ সরকার কতদিন টিকে থাকবে তা নিয়ে খোদ ক্ষমতাসীনদের মাঝেও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। তবে একটা ব্যাপারে দুই পক্ষের কোন সন্দেহ নেই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী জোটকে বিদায় নিতে হবে। নতুন সরকার এসে প্রথমেই গলাধাক্কা দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে আদালত হতে বিদায় করবে। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কক্সবাজারের বদিদের যে ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে তার পুরোটা কাজে লাগাবে নতুন সরকার। উচ্চ আদালত হতে ঝেটিয়ে বিদায় করবে বিচারক লীগের সব বিচারকদের। নতুন নিয়োগের হিড়িক পরবে। এবং প্রতিদান হিসাবে দেলোয়ার হোসেন সাইদী সহ যারা প্রানে বেচে যাবে তাদের সবাইকে নতুন রায়ে মুক্তি দেবে। কে জানে হয়ত আজকের আমৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের কেউ কেউ পতাকা উড়িয়ে নিজেদের মন্ত্রিত্ব জাহির করবে। হাজার হলেও সব সম্ভবের দেশ আমাদের বাংলাদেশ!

গোলাম আযম দেলোয়ার হোসেন সাইদীর দল ৭১'সালে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে, এ নিয়ে সন্দেহ করার নূন্যতম অবকাশ নেই। তবে তাদের বিচারের নামে বিচারক লীগের বিচারকরা যে তামাশা করে গেলেন তা জাতির ইতিহাসে কলংকজনক অধ্যায় হিসাবেই বিবেচিত হবে। যার সুবিধা ভোগ করবে খোদ আসামীরাই। আমাদের বিচার ব্যবস্থা দলীয় প্ল্যাটফর্মের উলংগ প্রদশর্নী মাত্র। তাই যতদিন শরীর হতে এ কলংক দূর করা যাচ্ছেনা ততদিন এসব আদালত এবং বিচারকদের কোন রায়ই সঠিক রায় হিসাবে বিবেচিত হবেনা।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন