বিল্লালকে জাতীয় বীর ঘোষনা করা হোক

Submitted by WatchDog on Tuesday, April 6, 2010

Thieves of Bangladesh

চুরির সাথে মিথ্যার কি সম্পর্ক তা নিয়ে নতুন কিছু না বল্‌হলেও চলবে। এই দুই সত্ত্বা এক কথায় একে অন্যের নিবিড় পরিপূরক! ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশ নামক দেশটার আপাদমস্তক প্রতিষ্ঠিত এমন একটা সত্যকে মিথ্যা প্রমান করলেন জনৈক বিল্লাল। পেশায় গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ চোর। এ নিয়ে মোটেও লজ্জিত নন তিনি, বরং সাংবাদিকদের কাছে অকপটে বলে গেলেন নিজ হাতে গড়ে তোলা চুরি সাম্রাজ্যের চমকপ্রদ কাহিনি। ২০ বছর ধরে কাজ করছেন এ লাইনে, গ্রেফতার হয়েছেন মোট ১৭ বার, কোন বারই ৩ মাসের বেশী জেল খাটতে হয়নি। এ কথা নতুন করে প্রমানের অপেক্ষা রাখেনা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন অথবা ক্ষমতাহীন রাজনীতিবিদ, পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবী সহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে জড়িত শতকরা প্রায় ১০০ জন স্বদেশী নিজেদের ভাগ্য গড়েন চুরি বাণিজ্যের উপর। এই চুরিকে হালাল করতে যে সমস্ত জনপ্রিয় টুলস্‌ ব্যবহার করা হয় মিথ্যা তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে মিথ্যাকে লালন করা হয় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, মন্ত্রী, এমপি হতে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, সমাজের পাতি নেতা, উপ নেতা, ছটাক নেতার দল নিজেদের ভাগ্য গড়েন মূলত চুরি এবং মিথ্যার আশ্রয়ে। ট্রুথ কমিশনে দেয়া ক'জনের স্বতস্ফুর্ত স্বীকারোক্তি বাদে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন চোর নিজের দোষ স্বীকার করছে কি-না এর কোন লিপিবদ্ধ রেকর্ড নেই। এ বিচারে বিল্লালের স্বীকারোক্তি হতে পারে নতুন অধ্যায়ের সূচনা। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর হতে ঢাকায় এসে কাজ খুঁজছিল বিল্লাল, হঠাৎ করেই পরিচয় হয় ভবিষ্যৎ উস্তাদ ছিদ্দিকের সাথে। এই ছিদ্দকের হাত ধরেই নাম লেখান গাড়ি চুরিতে। প্রথম চুরি হতে আয় হয় ২ হাজার। ২০ বছরে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক চুরি সাম্রাজ্য। নিজে না জড়িয়ে সাগরেদ দিয়েই কাজ করান এখন এবং ৩/৪ লাখ টাকার কম আয়ের সম্ভাবনা থাকলে এমন গাড়ির দিকে হাত বাড়ান না সাধারণত। বিল্লালের সাফ সুতরা জওয়াব, ২০০ কোটি টাকার মালিক হওয়ার আগ পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন এই প্রফেশন। এই প্রতিষ্ঠিত চোরের আপদকালীন দুর্যোগ মোকাবেলায় তৈরী আছে স্পেশালাইজড‌ বিশাল এক টিম। স্ত্রীর নেত্রীত্বে থানা, পুলিশ, উকিল, ডাক্তারদের সমন্বয়ে গড়া এই টিমের বদৌলতে অনেকটা নিরাপদেই চালিয়ে যাচ্ছেন এ ব্যবসা।

বিল্লালের জুতায় হাসিনা, খালেদা, তারেক, ককো, বাবর, মওদুদ, নাজমুল হুদা, নানকদের মত সমসাময়িক রাজনীতির বাঘ ভল্লুকদের পা ঢুকালে খুব কি বড় ধরনের পার্থক্য ধরা পরবে? শোনা যায় বিল্লাল মাত্র ২০ কোটি টাকার মালিক, পার্থক্য নিশ্চয় টাকার অংকে। নিজেরা স্বীকার না করা পর্যন্ত হাসিনা-খালেদা গং কত টাকার মালিক তা আমরা কোনোদিনই জানতে পারবনা। বিল্লালের সাথে পার্থক্যটা এখানেই। বিল্লাল ঘোষনা দিয়েছেন ২০০ কোটি টাকার মালিক হওয়া মাত্র চুরি হতে সড়ে দাঁড়াবেন। আমাদের বাঘ ভল্লুকের দল কত টাকার টার্গেট নিয়ে এ ব্যবসায় জড়িত আছেন তা যদি বিল্লালের মত জানিয়ে দিতেন জাতি হিসাবে আমরা নতুন আশায় বুক বাধতে পারতাম।

যথাযত কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব বিল্লালকে সময়ের সাহসী সৈনিক হিসাবে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের নতুন বীর হিসাবে ঘোষনা করতে।

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়

ভালো লাগলে শেয়ার করুন