ট্রাম্প সিনড্রম ও আজকের আমেরিকা...

Submitted by WatchDog on Sunday, February 26, 2017

 photo 2_zpsybmzxty0.jpg

জনসন কাউন্টির ওলাথে শহরের আরও একটা ব্যস্ত দিন। কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে চারদিক। প্রকৃতিতে শীতের আমেজ। আমেরিকার এ অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা অনেক সময় -৭ ডিগ্রী পর্যন্ত নেমে যায়, যা গরমে +৩২ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠতে কার্পণ্য করেনা। ক্যানসাস অঙ্গরাজ্যের চতুর্থ বৃহত্তম শহর ওলাথে। সোয়া লাখ জনসংখ্যার এ শহরে হানিওয়েল, এলডিআই, জারমিন ও ফারমার ইনস্যুরেন্সের মত কোম্পানি গুলোর স্থায়ী আবাস। শ্রীনিবাস কুচিবোথলা ও অলক মাদাসানি জন্মসূত্রে ভারতীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া শেষ করে থেকে গিয়েছিল ভাগ্য গড়ার অন্বেষায়। বিশ্বখ্যাত জিপিএস কোম্পানি জারমিনে যোগ্য প্রকৌশলী হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে খুব একটা সময় নেয়নি। প্রায় প্রতি শুক্রবার কাজ শেষে ঘণ্টা দুয়েকের জন্য দুই বন্ধু আড্ডা দেয় পাশের অস্টিন বারে। উদ্দেশ্য মগজ হতে ক্লান্তিকর সপ্তাহটাকে ঝেড়ে ফেলা। দুই পেগ হুইস্কি নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল বারের বাইরের প্যাটিওতে। পাশের টেবিলে বসা ছিল ৫১ বছর বয়সী এডাম পুরিনটন নামের সাদা ককেশিয়ান এক পুরুষ। বসার কিছুক্ষণের ভেতর অদ্ভুত আচরণ শুরু করল সে। শ্রীনিবাসন ও অলকের কাছে কর্কশ গলায় জানতে চাইল কোন ধরনের ভিসায় তারা এদেশে আছে। দুই ভারতীয় এডামের এ ধরণের অযাচিত আচরণ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো। কাজ হলোনা। উত্তর না পেয়ে সে চীৎকার শুরু করে দিল এবং তাদের দ্রুত এ দেশ ত্যাগ করার জন্য গালাগালি শুরু করে দিল। বারের বাকি গেস্টদের কেউ কেউ মালিক পক্ষের কাছে এডামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো এবং শেষপর্যন্ত এসকর্ট করে তাকে বের করে দেয়া হল। ঘটনার এখানেই শেষ ভেবে এক গ্রাহক শ্রীনিবাসনদের টেবিলে এসে এডামের জঘন্য আচরণের জন্য ক্ষমা চাইল এবং তিনজনের জন্য নতুন এক রাউন্ড হুইস্কির অর্ডার দিয়ে গল্পে মজে গেল।

অল্প কিছুক্ষণের ভেতর এডামকে দেখা গেল দরজায়। হাতে রাইফেল। বিনা উস্কানিতে শ্রীনিবাসনের মগজ বরাবর গুলি ছুড়ল। অলকের হাতে ফুড়ে ছুটে গেল গুলি। টেবিলের তৃতীয় গ্রাহকের বুক বরাবর ছুড়ে দিল অটোমেটিক রাইফেলের গুলি। রক্তের বন্যা বয়ে গেল বারে। ছুটে এলো পুলিশ, সাথে এম্বুলেন্স। ততক্ষণে হাল্কা বাতাসে মিলিয়ে গেছে এডাম। শ্রীনিবাসনকে বাঁচানো যায়নি। বাকি দুজনের চিকিৎসা চলছে স্থানীয় হাসপাতালে। এডাম ততক্ষণে পালিয়ে গেছে প্রতিবেশী অঙ্গরাজ্য মিজৌরিতে। ইতালিয়ান রেস্টুরেন্ট আপেলব্যিতে বসে মদ খাচ্ছিল এবং পাশে বসা এক মহিলার সাথে গল্প করছিল ক্যানসাসে তার এডভেঞ্চার নিয়ে। এটা নাকি ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা প্রথম ও মহান বানানো সংগ্রামে তার ব্যক্তিগত অবদান।

উল্লেখ্য, ভারতই একমাত্র দেশে যে দেশের লাখ লাখ নাগরিক নির্বাচনকালীন সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুর্তি বানিয়ে পুজা দিয়েছিল বিজয়ের প্রার্থনায়।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন