লজ্জা পাচ্ছেন শুয়োরের ছাওয়ালরা

Submitted by WatchDog on Friday, January 24, 2014

Bangladesh

ঘটনাটা ৭১'এর আগে। চৈত্র মাস। প্রচন্ড গরম। সাথে লু হাওয়া। দাদাবাড়ি যাচ্ছি মদনগঞ্জগামী রেলে চড়ে। প্রচন্ড ভীড়ে বসার জায়গা দূরে থাক দাঁড়াতে পারলেই খুশি। যেদিকে যাচ্ছি সে এলাকার জীবন আবর্তিত হয় পাশের বাবুর হাটকে ঘিরে। দিনটা ছিল সোমবার। হাটের দিন। তাঁতি, জেলে, কামার, কুমার দিনান্তে সবাই ঘরে ফিরছিল। ট্রেন যেখান হতে ছেড়ে আসে সেখান হতে যাত্রাটা শুরু করেছিলাম বলে সিট পাওয়ায় অসুবিধা হয়নি। মাধবদী নামক ষ্টেশন ছাড়ার পর তিলধারণের জায়গা ছিলনা বগিতে। গরমের সাথে যোগ হয়েছে গায়ে গতরের ভ্যাপসা গন্ধ। এত অসুবিধার মাঝেও কাউকে অসুখী দেখালো না। বিড়ি খাচ্ছে কেউ কেউ। দলবেঁধে গল্প করছে অনেকে। কোলাহলের মাঝে কাউকে লম্বা সালাম দিতে শোনা গেল। পুঁথির টানে স্থানীয় চেয়ায়ম্যান লাল মিয়া হত্যার ফিরিস্তি শুরু করতে শান্ত হয়ে গেল বগি। সবার মনযোগ কবিয়ালের দিকে। পুঁথি ছিল উপলক্ষ মাত্র। মুল উদ্দেশ্য স্বপ্নে কুড়িয়ে পাওয়া তাবিজ বিক্রি। পৃথিবীর তাবৎ রোগের উপশম করার তাবিজ। স্বপ্নদোষ হতে শুরু করে প্রেমে সফলতা, কোনকিছু বাদ নেই। বেশকিছুটা সময় ব্যায় করার পরেও কাউকে তাবিজ কিনতে দেখা গেলনা। দমে গেলনা বিক্রেতা। নতুন করে শুরু করল লাল মিয়া অধ্যায়। কাধে ঝোলানো বস্তা হতে বের করল দ্বিতীয় পণ্য, দাতের মাজন। তাতেও কেউ সাড়া দিলো না। তৃতীয় প্রডাক্ট বের করার আগে কেউ একজন এগিয়ে এল এবং একসাথে বেশ কটা তাবিজ ও মাজন কিনে নিল। বিক্রেতার কানে কানে কি একটা বলতেই থেমে গেল সে এবং মোল্লারচর আসার আগে চলন্ত ট্রেনে বায়বীয় কায়দায় চলে গেল পরের কামড়ায়। এবার দৃশ্যপটে হাজির হল নতুন বিক্রেতা। আর কেউ নয়, প্রথম বিক্রেতার ক্রেতা নিজে।

উপরের ঘটনাটা মনে পরে গেল তিন মোড়লের ক্রিকেট দখলের উপর বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সিদ্ধান্ত পড়ে। নিজেদের প্রডাক্ট বিক্রি করতে পাবন সাহেব নাকি দুবাই যাবেন এবং ঝোপ বুঝে কোপ মারবেন। সন্দেহ নেই শেখ হাসিনার প্রভুরা নিজেদের প্রডাক্ট বিক্রির আগে পাবন নামক খুচরা বিক্রেতার হাতে কিছু নগদের হিসাব ধরিয়ে নামিয়ে দেবেন পরবর্তী ষ্টেশনে। বোর্ড রুদ্ধদ্বার কক্ষে ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রভুদের সেবা করার। সিদ্ধান্তটা পাবলিক করতে লজ্জা পাচ্ছেন শুয়োরের ছাওয়ালরা।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন